পুঞ্জিভূত লোকসানে থাকলে বোনাস বা স্টক ডিভিডেন্ড প্রদানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর। তবুও নিষেধাজ্ঞা লঙ্গন করে ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য বোনাস ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বিডি অটোকার্স লিমিটেড। এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইন লঙ্গণ করার অভিযোগ উঠেছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। পক্ষান্তরে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সঙ্কা তৈরি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।

মঙ্গলবার ডিএসই’র প্রকাশিত তথ্য সূত্রে জানা যায়, ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসান হয়েছে ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

সূত্র মতে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট একটি নোটিফিকেশনে বলা হয়েছে কোন প্রতিষ্ঠানের পুন্জিবুত (রিটেইন আর্নিং) লোকসান থাকলে সেই কোম্পানি লভ্যাংশ দিতে পারবে না। এটিকে আরও পরিস্কার করার জন্য গত ২ অক্টোবর একটি নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের স্বার্থে তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা ও বিতরণ সংক্রান্ত একটি নোটিফিকেশন ২০১৮ সালের ২০ জুন প্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে বোনাস শেয়ার সংক্রান্ত আরও একটি নোটিফিকেশন চলতি বছরের ২৩ মে প্রকাশ করে। বিষয়টি বিনিয়োগকারী ও কোম্পানির আবেদন পর্যালোচনা পূর্বক বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের স্বার্থে অধিকতর স্পষ্ট করার প্রয়োজনে নগদ লভ্যাংশ সংক্রান্ত ব্যাখ্যা দেয় বিএসইসি।

ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, অন্যান্য সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন করে, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহ পুঞ্জিভূত লোকসান বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট বছরের অর্জিত মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ, ঘোষণা ও বিতরণ করতে পারবে।

এদিকে, আইন ভঙ্গ হলে কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে।

ডিএসই সূত্র জানা যায়, গত ২০ অক্টোবর কোম্পানির পর্ষদ সভায় ৩০ জুন ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ বোনাস/স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। এ সময় কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.৫৩ টাকা।

তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটি শুধুমাত্র গত বছর ৩ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

ডিভিডেন্ড ঘোষণার দিন লেনদেনের শুরুতেই ১০ টাকা বেড়ে যায় কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের দরে। আগের দিন ২০ অক্টোবর লেনদেন শেষ হয় ১৬৮ টাকা ৬০ পয়সায়। ২১ অক্টোর দিনের শুরুতেই দর বেড়ে দাঁড়ায় ১৭৯ টাকা। এ হিসেবে দিনের শুরুতেই প্রতিটি শেয়ারের দর বাড়ে ১০ টাকা ২০ পয়সা। যদিও দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে ১৬৬ টাকা ১০ পয়সা। এদিন কোম্পানিটির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৯ হাজার ৩৮৮টি।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মো. সাইফুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করে বিএসইসি। কোন প্রতিষ্ঠান যদি আইন ভঙ্গ করে কোন কিছু করে, তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে কমিশন।