Decision Maker

এতো উদ্যোগেও ব্যাংকগুলো কেনো সাড়া দিল না তার জবাবদিহিতা থাকা উচিত

ব্যাংকের ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর নানামুখী উদ্যোগে বাজারে গতি ফিরবে এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। কেননা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি) কমিশন চেয়ারম্যানের একান্ত উদ্যোগে সাম্প্রতিক বেশ কিছু সংস্কার হয়েছে। একের পর এক নেয়া পদক্ষেপে যখন পুঁজিবাজারে স্বস্তি আনা যায়নি। ঠিক তখন বিএসইসি চেয়ারম্যান উপায় না দেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের দারস্ত হলেন এবং দীর্ঘদিনের দাবী এক্সপোজার সমস্যার সমাধান করলেন। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে থাকা বিনিয়োগকারীদের সব চাওয়াই পূর্ণ হয়েছে, এমন ধারনা থেকে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ১০০ পয়েন্টের বেশী বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু আজ সেই বাজারের ওপর থেকেই মূখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ব্যাংকাররা। বাজার বা কমিশনের প্রতি যে তাদের আস্থা নেই তা আজ স্পষ্ট। কারণ এক্সপোজার সংশোধনের পর ব্যাংকগুলোর হাতে বর্তমানে ১ লাখ কোটি টাকার ওপরে তাৎক্ষণিক বিনিয়োগযোগ্য ফান্ড রয়েছে। আস্থা না থাকায় সে ফান্ডের যথাযথ ব্যবহার করছেন না তারা। ফলশ্রুতিতে সূচকে ব্যাপক পতন হয়েছে। যাতে দ্যুতি ছড়িয়েছে ব্যাংক খাত। আজ ব্যাংক খাতে লেনদেন করা ২৮টি কোম্পানির মধ্যে ২২টির শেয়ার দরই কমেছে। এমনকি গতকাল একশো পয়েন্টের সূচক বৃদ্ধিতে কয়েকটি ব্যাংকের দর যে হারে বেড়েছিল আজ ৬০ পয়েন্টের পতনে তার চেয়ে বেশি কমেছে। আর পুঁজিবাজারের ভরসার স্থল ব্যাংক খাতের এমন অবস্থা সার্বিক বাজার চিত্রকেই প্রভাবিত করেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক্সপোজার সমস্যা সমাধান হওয়ার পর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ভেবেছিলেন বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। তাই দীর্ঘ পতনে মারখাওয়া বিনিয়োগকারীরা শেষ সম্বলটুকু গতকাল বিনিয়োগ করেছিলেন। তাদের তৎপরতায়ই সূচকে উল্লম্ফন হয়েছিল। কিন্তু সক্রিয় ছিলেন না প্রাতিষ্ঠানিক তথা বড় বিনিয়োগকারীরা। আজ আর সাধারণদের সামার্থ না থাকায় বাজারে ছন্দ পতন হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের কাছে নগদ ও নগদযোগ্য যে টাকা রয়েছে তা আসলে বিনিয়োগ হবে কোথায় বা কাদের স্বার্থে? এর আগেও সরকারের পক্ষ থেকে বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ পুন:বিন্যাসের ঐতিহাসিক সযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।সরকারি খাতের টাকার একটি বিশাল অংশ বেসরকারী ব্যাংকে রাখার সুযোগ দেয়া হয়েছে।সুদ হার কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা তা রাখেনি।মোট কথা সরকারের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা যা নেয়ার তার পুরোটুকুই নিয়েছে ব্যাংকগুলো।আজ সোমবার পর্যন্ত তালিকাভূক্ত ব্যাংকগুলোর হাতে কম করে হলেও ১০ হাজার কোটি টাকার ক্যাশ বিনিয়োগযোগ্য ছিলো। কিন্তু কেনো তারা এতো সুবিধা নিয়েও তা বিনিয়োগ করলোনা তা জবাব দিহিতার আওতায় আনা উচিত বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।তারা বলেছেন, একের পর সুবিধা নেবে অথচ বাজারের জন্য কিছুই করবেনা এমনটি হতে দেয়া ঠিক নয়।

Exit mobile version