প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়া অনিয়মের অভিযোগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্তি আটকে থাকা কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ার বরাদ্দ সম্পন্ন করেছে। কোম্পানির আইপিও লটারিতে বরাদ্দ পাওয়া আজ (৯ জুন) শেয়ার সিডিবিএলের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবে জমা হয়েছে। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটির প্রসপেক্টাসে নানা অসঙ্গতি থাকায় প্রতিষ্ঠানটিকে তালিকাভুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে প্রস্তাব দিয়েছে ডিএসই।
এ বিষয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম মাজেদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনে নানা অসঙ্গতির অভিযোগ থাকার বিষয়টি ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) তদন্ত করছে। এফআরসি কোম্পানিকে তলব করলেও সাড়া দেয়নি কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ। কপারটেক বিতর্কের অবসান ঘটানোর জন্য প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, এমডিকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাদের অন্য পরিচালক দেশের বাইরে রয়েছেন-এমন কারণ দেখিয়ে তারা আসেননি। তাই কপারটেকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে প্রস্তাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বরে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ২ কোটি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে শেয়ারবাজার থেকে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে ২০ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন দেয় বিএসইসি। বিএসইসির অনুমোদন নিয়ে ইতিমধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে থেকে প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের আবেদন গ্রহণ করছে কোম্পানিটি। চলতি বছরের ৩১ মার্চ থেকে শুরু হয় এ কোম্পানির আইপিও আবেদন। যা চলে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত। আর এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ কোম্পানির আইপিও লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
আইপিও’র টাকা থেকে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, প্লান্ট ও যন্ত্রপাতি ক্রয় স্থাপনে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ভবন ও সিভলি ওয়ার্কে খরচ হবে ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আইপিও ফান্ড পাওয়ার ১২ মাসের মধ্যে প্রজেক্টের কাজ শেষ করা হবে। আর আইপিও বাবদ খরচ হিসাব করা হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
৩০ জুন, ২০১৮ সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষা হিসাবে, কোম্পানিটি ৫২ কোটি ৬৬ লাখ ৫৩ হাজার ২৪২ টাকার পণ্য বিক্রি করে কর পরিশোধের পর প্রকৃত মুনাফা করেছে ৪ কোটি ১০ লাখ ১৭ হাজার টাকা। এই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.০২ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ০.৮৮ টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা হিসাব করে। এই সময়ে শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য(এনএভি) হয়েছে ১২.০৬ টাকা।
আগামী তিন বছরে কোম্পানিটির পণ্য বিক্রি শতকোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছেন এর কর্মকর্তারা।
কোম্পানিটি মূলত কপার বার, স্ট্রিপ, ওয়্যার ও টিউব উৎপাদন করে। ৩০ জুন, ২০১৮ এ কোম্পানিটিরি মোট আয়ের ৩৮.৪৭ শতাংশ এসেছে কপার বার থেকে; ১৭.৭৭ শতাংশ এসেছে কপার স্ট্রিপ; ১৫.৬৬ শতাংশ এসেছে কপার ওয়্যার এবং ১১.৩৩ শতাংশ এসেছে কপার টিউব বিক্রি করে। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এমটিভি ক্যাপিটাল লিমিটেড।