পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন সিকিউরিটিজসমূহে তফসিলি ব্যাংকের বিনিয়োগ সম্পর্কে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, এ ধরণের বিনিয়োগে ঝুঁকি গ্রহযোগ্য মাত্রায় রাখার উদ্দেশ্যে ইক্যুইটি শেয়ার, নন-কনভার্টেবল কনভার্টেবল প্রেফারেন্স শেয়ার, নন-কনভার্টেবল বন্ড, ডিবেঞ্চার, ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে।
অনুসরনীয় নীতিমালাগুলো হচ্ছে-
অনুসরনীয় বিধিমালা-১:
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ২৬ গ ধারার ব্যাখ্যাংশে যে অর্থে ‘ব্যাংক
সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি’ -কে বুঝানো হয়েছে সেই অর্থে ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত এবং তালিকাভুক্ত নয় এরূপ- ইক্যুইটি শেয়ার, নন-কনভার্টেবল কনভার্টেবল প্রেফারেন্স শেয়ার, নন-কনভার্টেবল বন্ড, ডিবেঞ্চার, ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডে কোন ব্যাংকের বিনিয়োগ বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৪/২০১৪ এ সংজ্ঞায়িত ‘আর্থিক লেনদেনের’ অন্তর্ভুক্ত হবে এবং এরূপ কোন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ২৬ গ ধারার বিধান এবং উপর্যুক্ত বিআরপিডি সার্কুলারে বর্ণিত নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে।
অনুসরনীয় বিধিমালা-২:
ডিওএস সার্কুলার নং-০৩/২০১৯ এ বর্ণিত অবকাঠামোগত প্রকল্পসমূহে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক অনুমোদিত কোন এসপিভির মাধ্যমে বিনিয়োগের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া অন্য কোন অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ইক্যুইটি শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত নির্দেশনা কার্যকর হবে।
(ক) ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ২৬ক (১) ধারা অনুসারে ইক্যুইটি শেয়ারের মোট ক্রয়মূল্য বিনিয়োগকারী ব্যাংকের আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংসের মোট পরিমাণের ৫ (পাঁচ) শতাংশের বেশি হবে না এবং ক্রয়কৃত শেয়ারের পরিমাণ সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আদায়কৃত মূলধনের ১০ (দশ) শতাংশের বেশি হবে না।
(খ) শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে উক্ত কোম্পানির ওপর বিনিয়োগকারী ব্যাংকের পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিবেচনায় প্রচলিত হিসাব রীতি অনুসারে ইক্যুইটি মেথড অনুসরণে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করতে হবে।
(গ) দফা (ক) এ বর্ণিত শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে প্রতি ইউনিট শেয়ারের ক্রয়মূল্য প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামসহ
সংশ্লিষ্ট সময়ের এনএভি এর ১১০ (একশত দশ) শতাংশের বেশি হবে না।
অনুসরনীয় বিধিমালা-৩:
(ক) বিনিয়োগকৃত প্রেফারেন্স শেয়ার নন-কনভার্টেবল কিউমুলেটিভ হতে হবে।
(খ) প্রেফারেন্স শেয়ারে বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ক্ষেত্রে ব্যাংকের সিঙ্গেল ব্ররোয়ার এক্সপোজার লিমিটের অন্তর্ভুক্ত হবে।
(গ) প্রেফারেন্স শেয়ারের মেয়াদ ৫ (পাঁচ) বছরের বেশি হবে না এবং সুদ/ নগদ ডিভিডেন্ডের হার
সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
(ঘ) যে কোন হিসাব বর্ষ শেষে নির্ধারিত সুদ/ নগদ ডিভিডেন্ড পরিশোধিত না হলে সুদসহ আসল পরিমাণের
উপর ২৫ (পঁচিশ) শতাংশ হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এরূপ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বছরের জন্য অতিরিক্ত
২৫ (পঁচিশ) শতাংশ এবং তিন বছর সুদ/ নগদ ডিভিডেন্ড অপরিশোধিত থাকলে ১০০ (একশত) শতাংশ
প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এরূপ কোম্পানিকে খেলাপি হিসেবে প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইন,
১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত) এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান প্রযোজ্য হবে। প্রেফারেন্স শেয়ারে বিনিয়োগকে ঋণ হিসেবে বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক-কে প্রচলিত নিয়মানুসারে সিআইবিতে রিপোর্ট করতে হবে।
অনুসরনীয় বিধিমালা-৪:
(ক) পাবলিক সেক্টর ইনটাইটি (পিএসই) ব্যতীত অন্যান্য ইস্যুয়ার কর্তৃক বিএসইসির অনুমোদন সাপেক্ষে
ইস্যুকৃত নন-কনভার্টেবল বন্ড বা ডিবেঞ্চারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত কোন এসপিভি বা সমজাতীয় তহবিলের মাধ্যমে সম্পাদিত হতে হবে।
(খ) পিএসই ব্যতীত অন্যান্য ইস্যুয়ারের ক্ষেত্রে বন্ড বা ডিবেঞ্চারের মোট ইস্যুকৃত পরিমাণের
ন্যূনতম ১০ (দশ) শতাংশের সমপরিমাণ একটি সিঙ্কইন ফান্ড থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ইস্যুয়ারের প্রতি বছরের রেভিনিউর অন্যূন ৩ (তিন) শতাংশ উক্ত ফান্ডে জমা করতে হবে। এরূপ সিঙ্কইন ফান্ড পরিচালনার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ট্রাস্টির উপর ন্যস্ত থাকার বিষয়টি বিনিয়োগকারী ব্যাংক নিশ্চিত করবে।
(গ) যে কোন হিসাব বর্ষ শেষে নির্ধারিত সুদ পরিশোধিত না হলে সুদসহ আসল পরিমাণের উপর ২৫ (পঁচিশ)
শতাংশ হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এরূপ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বছরের জন্য অতিরিক্ত ২৫ (পঁচিশ) শতাংশ
এবং তিন বছর সুদ অপরিশোধিত থাকলে ১০০ (একশত) শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এরূপ
কোম্পানীকে খেলাপি হিসেবে প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান
প্রযোজ্য হবে। বন্ড বা ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগকে ঋণ হিসেবে বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে
প্রচলিত নিয়মানুসারে সিআইবি-তে রিপোর্ট করতে হবে।
অনুসরনীয় বিধিমালা-৫:
(ক) বিএসইসি কর্তৃক অনুমোদিত ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা ফান্ডসমূহে ব্যাংকের মোট বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংসের মোট পরিমাণের ৫ (পাঁচ) শতাংশ এবং কোন একটি একক মিউচ্যুয়াল ফন্ডের মোট ইউনিটের ১৫ (পনের) শতাংশের বেশি হবে না।
(খ) ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্ভাব্য মূল্য হ্রাসজনিত ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ২৮ জুন, ২০১৫ তারিখের ডিওএস সার্কুলার লেটার নং-১০ এর নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে।
এছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিবরণীর সফট কপি ত্রৈমাসিক অন্তে
পরবর্তী মাসের ১০(দশ) তারিখের মধ্যে ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনে দাখিল করতে হবে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।