সাড়ে তিন ঘন্টা আটক থাকার পর মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশ পুজিঁবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশীদ চৌধুরী ও সাধারন সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক। আজ দুপুরে সাধারন বিনিয়োগকারীদের পক্ষে পুঁজিবাজারের অব্যাহত ধসের প্রতিবাদে মানববন্ধন প্রস্তুতির পূর্বে এ আটকের ঘটনা ঘটে।এর আগে দুপুর সোয়া বারোটায় তাদেরকে মতিঝিল থানা পুলিশ তলব করে নিয়ে যায়।
মুক্তির পর সাধারন সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক টেলিফোনে পুঁজিবাজার ডটকমকে জানান, আমাদেরকে সাড়ে তিন ঘন্টা আটকে রেখেছিল মতিঝিল থানা পুলিশ।মতিঝিল থানার ওসি ইয়াসিন আরাফত আমাদের বলেছেন, ওপরের নির্দেশ আছে আপনাদের আটক করার জন্য। তবে যদি আর কোনো দিন মতিঝিল এলাকায় বা এর আশে পাশে বিক্ষোভ বা মানব বন্ধন না করার ব্যাপারে মুচলেকা দেন তাহলে ছেড়ে দিতে পারি। আর আজ যারা মানব বন্ধন করতে আসছে তাদেরকে টেলিফোনে বলে দেন, স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে আর কখনো এগুলো হবেনা।অনেকটা বাধ্য হয়ে পরিষদের দুই নেতা টেলিফোনে তাই জানিয়ে দেন এবং ওসি (তদন্ত) মনির হোসেনের লেখা মুচলেকায় স্বাক্ষর করে থানা থেকে মুক্তি পান।
মুক্তির পর প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে সাধারন সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক পুঁজিবাজার ডটকেমকে বলেন, বাজারে আরো অনিয়ম দুর্নীতি এবং লুটপাট বাড়ানোর জন্যই আমাদের কন্ঠ রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস বিএসইসি পুনর্গঠন না করা পর্যন্ত বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবেনা।আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রনকারী এই সংস্থাটির পুনর্গঠন দাবী করছি।আমরা মনে করি আমাদের কন্ঠ রোধের চেষ্টা বাজারের জন্য সুখকর নয়।
এর আগে সংগঠনটির সহসভাপতি আহসান বাচ্চু গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ডিএসইর সাধারন ডায়রীর (জিডি) পরেও বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার দায়ে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে মতিঝিল থানায় তলব করা হয়। এরই আলোকে তারা দুজন দুপুরে থানায় গেছেন।
উল্লেখ্য গত ২৭ আগস্ট বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের নামে দেশের শেয়ারবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার কারনে বাংলাদেশ পুজিঁবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় জিডি করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। জিডিতে শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে করণীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মতিঝিল থানার অফিসার ইনচার্জকে অনুরোধ করা হয়।
জিডির পরে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ কার্যক্রম কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তবে গত সপ্তাহ থেকে তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেছে। তারা গতকালও (২২ অক্টোবর) ডিএসইর সামনে বিক্ষোভ করেছে।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ২৭ আগস্ট আনুমানিক ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশ পুজিঁবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ৯-১০ জন লোক ডিএসইর সামনে মাইকসহ বিক্ষোভ করে। যাতে ডিএসইর সদস্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াত ও অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যঘাত ঘটে। এরা বেশ কিছুদিন যাবত এ বিক্ষোভ করে আসছে। এছাড়া শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সম্মানহানিকর মন্তব্য করছে।
জিডিতে আরও বলা হয়, বিনিয়োগকারীদের এ ধরনের কার্যকলাপ দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ পুজিঁবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। ফলে বিদেশীরা বাংলাদেশের পুজিঁবাজারে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হচ্ছে।