দুর্নীতি, লুটপাট ও আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (পিএলএফএসএল) কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পিপলস এর সাবেক ৯ পরিচালকসহ মোট ১১ জনকে নিজেদের যেকোনো হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নে দায়ের করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার এ আদেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকার।
যেসব ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তারা হলেন- পিএলএফএসএল’র সাবেক পরিচালক এম মোয়াজ্জেম হোসেইন, নারগিস আলামিন, হোমাইরা আলামিন, আরেফিন সামসুল আলামিন, মোহাম্মদ ইউসুফ ইসমাইল, মতিউর রহমান, বিশ্বজিৎ কুমার রায়, খবিরুদ্দিন মিয়া, মোহাম্মদ সহিদুল হক এবং পিএলএফএসএলের শীর্ষ দুই কর্মকর্তা কবির মুস্তাক আহমেদ ও নৃপেন্দ্র চন্দ্র পণ্ডিত। ওই ১১ ব্যক্তির সম্পদ ও ব্যাংক হিসাবের ওপর কেন অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না, তা-ও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
গতকাল পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নে ‘দি ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট অ্যাক্ট, ১৯৯৩-এর ২৯ ধারায় হাইকোর্টে আবেদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে মামলায় শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজিব উল আলম ও কাজী এরশাদুল আলম। শুনানিতে পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদন গ্রহণ করে আদালত। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যাবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামান খানকে পিপলস লিজিংয়ের অবসায়ক নিযুক্ত করা হয়েছে।
১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরু করা পিপলস লিজিংয়ের প্রধান কার্যালয় ঢাকার মতিঝিলে। এ ছাড়া গুলশান ও চট্টগ্রামে দুটি শাখা রয়েছে। পিপলস লিজিংয়ে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ৭৪৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালের পর থেকে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
তাদের মোট শেয়ারের ৬৭ দশমিক ৮৪ শতাংশই রয়েছে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে স্পনসর ও পরিচালকদের হাতে রয়েছে ২৩ দশমিক ২১ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে।