কয়েক মাসের মধ্যে একাধিক সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। পাশাপাশি ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) জবাবদিহির মধ্যে আনা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন।
আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমি যখন এখানে বসে ছিলাম তখন অর্থমন্ত্রী আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন- বাজার উন্নয়নের জন্য যা যা করতে হয় আমরা সবপ্রকার চেষ্টা করবো। কয়েক মাসের মধ্যে সরকারি লাভজনক একাধিক ভালো প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। আপনি যেহেতু একটি ফাংশনের মধ্যে আছেন সবাইকে জানিয়ে দেন। বাজারে ইনডেক্স (সূচক) শুধু পজেটিভ হলে হবে না। বাজারের টার্নওভার (লেনদেন) যেন অনেক বড় হয়, সবার ভেতরে যেন একটা আস্থার সৃষ্টি হয়, আমরা সেই পরিকল্পনা নিয়েছি।
এম খায়রুল হোসেন বলেন, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের যে ভূমিকা…, আইসিবির বন্ডের ২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে দেখা গেল বিনিয়োগকারীদের যে টাকা দেয়ার কথা তার ৫০ শতাংশ দিয়েছে, বাকি ৫০ শাতংশ ডিবেঞ্চারে লোন হিসেবে দিয়েছে। আমরা তাদের জবাবদিহির আওতায় আনবো। ফান্ড জমা হবে। সেই ফান্ড বাজারকে সাপোর্ট না দিয়ে, অন্য গার্মেন্টস কোম্পানিকে দেবেন- এগুলো করা যাবে না। বিডিবিএলের (বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড) মাধ্যমে কীভাবে বাজারকে সচল রাখা যায়, সে ব্যবস্থা আমরা করবো।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন- বীমার থেকে সরকারি লাভজনক কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। সেই লাভজনক কোম্পানি শিগগির আপনারা দেখতে পাবেন। কয়েক মাসের মধ্যে দুই-একটি প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে আসবে।
মোবাইল অপারেটর রবির বিষয়েও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে খায়রুল বলেন, রবি ও গ্রামীণফোনের যে সমস্যা তার সমাধান হয়ে যাবে। রবি আমাদের সঙ্গে বসেছে। প্রথমে ওরা বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসতে চেয়েছিল। আমরা বলেছি, ফেস ভ্যালুতে আসতে। কারণ, বাজারে যদি আপনি ফেস ভ্যালুতে না আসেন, তাহলে বিনিয়োগকারী কিছুই পাবে না। আপনাদের ব্যালেন্স সিট এখনও ওতো শক্তিশালী নয়। ওরা এতেও রাজি হয়েছে।
আগামী বছরের জুনের আগেই পুঁজিবাজরে অনেকগুলো নতুন নতুন পণ্য আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাজারে যখন বিনিয়োগকারীর অল্টারনেটিভ চয়েজ বেড়ে যাবে, তখন বিনিয়োগকারীর লসের মাত্রা কমে যাবে। বাজারের গভিরতা বাড়বে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা বাড়বে। আমরা সেই দিনের প্রতিজ্ঞা করছি। আশা করি, আগামী জুনের আগেই অনেক নতুন প্রোডাক্ট আমরা বাজারে দেখতে পারবো।
বিনিয়োগ শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, টেকনিক্যাল এনালাইসিসের ক্ষেত্রে ভিন্নতা এসেছে। কয়েক বছর আগে আমাদের দেশে যে টেকনিক্যাল এনালাইসিস করা হতো, আপনি আমেরিকাতে যান, দেখবেন ধরণ ও সফটওয়্যারে ভিন্নতা এসেছে। তাই প্রত্যেকটি সময়ে বিনিয়োগ শিক্ষা ছাড়া উপায় নেই।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিএসইসির কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কমিশনার হেলাল উদ্দিন নিজামী এবং স্বপন কুমার বালা উপস্থিত ছিলেন।