বাজার উন্নয়নে নীতি-নির্ধারকসহ সব মহলের নেয়া ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে গত কয়েক কার্যদিবস যাবৎ সূচক ও লেনদেনে কিছুটা ইতিবাচক প্রবণতা বিরাজ করছে। সেই ধারাবাহিকতা আজ সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসেও যেন বিদ্যমান থাকলো। যদিও আজ সূচকে সবুজ সংকেত থাকলেও লেনদেন সামান্য কমেছে। তবে নিয়ন্ত্রকদের নেয়া পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হলে পুঁজিবাজার পুরোদমে তার কাঙ্খিত গতি ফিরে পাবে। কাজেই প্রত্যাশ পূরণের এমন গ্রীণ সিগন্যালে বিনিয়োগকারীরা হতাশ নন বলে মনে করেছে বাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, আমাদের পুঁজিবাজারে বর্তমানে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী ডে ট্রেডিং করে থাকেন। তারা দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি নিতে চান না। কারণ তাদের ধারণা স্বল্প মেয়াদে ট্রেড করলে ভলো লাভ পাওয়া যায়। বিনিয়োগকারীদের এই স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ প্রবণতা যদি থেকে যায় তবে পুঁজিবাজারে কখনই স্থিতিশীলতা আসবে না। কেননা ডে-ট্রেডিংয়ের কারণে মাঝারি বা দীর্ঘ মেয়াদের জন্য কেউ বিনিয়োগ করছে না, যার কারণে বর্তমানে কিছুটা তারল্য সংকট রয়েছে।

এদিকে, সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের সামান্য উত্থানে শেষ হয় লেনদেন। এদিন শুরুতে উত্থান-পতন থাকলেও শেষ দিকে সূচকে সামান্য উত্থান ঘটে। মঙ্গলবার লেনদেন শেষে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে টাকার অংকে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে। দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ০.২৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫২২৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১২০৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮৪৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫২টির, কমেছে ১৪৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৪৭২ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

এর আগের কার্যদিবস দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৫২২৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১২০২ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৮৪৭ পয়েন্টে। আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ৪৮৫ কোটি ৩৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১২ কোটি ৪১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯ হাজার ৭০২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৫৯টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ১১০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ২০ লাখ ২৭ হাজার টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্ট-ব্যক্তিরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা যেন কোম্পানির মৌলভিত্তি বিচার না করে শেয়ার কেনাবেচা না করেন। কারণ, দেখেশুনে বিনিয়োগ করে অপেক্ষা করলে এখান থেকে ভালো মুনাফা করা সম্ভব। বিনিয়োগের আগে অবশ্যই কোম্পানির ইপিএস ও আর্থিক অবস্থা ভালো করে দেখে নেওয়া উচিত। বিনিয়োগকারীদের ভালো শেয়ার বাছাই করা জরুরি। কারণ, ভালো শেয়ার বাছাই করতে না পারলে বিনিয়োগকারীদের মাশুল দিতে হয়। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর যে কোনো দেশের পুঁজিবাজারেই এ চিত্র লক্ষ করা যায় বলেও মন্তব্য করছেন তারা।