প্রস্তাবিত বাজেটে (২০১৯-২০২০) শেয়ারবাজারের জন্য যে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে সাময়িকভাবে একমত প্রকাশ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। মূলত প্রস্তাবিত বাজেটে স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ ট্যাক্সারোপ, পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি রিটেইনড আর্নিংস এবং রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ ট্যাক্সারোপ করায় বেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তবে গেল ৬-৭ বছরের বাজারে কোম্পানিগুলো আচরণের প্রেক্ষিতে এ দুটি সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে কার্যকর করা দরকার বলে মনে করেন ডিএসই’র পরিচালক মো: রকিবুর রহমান। আজ ১৬ জুন অনুষ্ঠিত ডিএসই’র বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখিত বিষয়গুলো পুন:বিবেচনা করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাবেন বলে ডিএসই’র পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন সাংবাদিকদের জানালেও রকিবুর রহমান তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।

রকিবুর রহমান বলেন, গত ৬-৭ বছরের বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোম্পানিগুলো স্টক ডিভিডেন্ডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাগজ ধরিয়ে দিচ্ছে। কোম্পানির পেইড-আপকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এমন অবস্থা তৈরি করেছে যে এই কোম্পানিগুলো আর ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না। এছাড়া ডিভিডেন্ড না দিয়ে কোম্পানির রিজার্ভ ও সারপ্লাস বৃদ্ধি করছে। এতে সবদিক থেকেই বিনিয়োগকারীরা বঞ্চিত হচ্ছে। তাই কোম্পানিগুলোকে দায়িত্বশীলতার মধ্যে আনতে এই ট্যাক্স আরোপ যথাযথ হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কিছুটা হলেও ক্যাশ ডিভিডেন্ড পাবেন। যদিও এটি দীর্ঘমেয়াদে ফলপ্রসু হবে না তবে সাময়িকভাবে ২-৩ বছর এই প্রাকটিস থাকা উচিত বলে মনে করেন রকিবুর রহমান।

আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রকিবুর রহমানের এমন বক্তব্যের পর ডিএসই’র চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল হাশেম তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এটিই ডিএসই’র বোর্ডের বক্তব্য বলে জানিয়ে দেন।

উল্লেখ্য, বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রেস রিলিজ পাঠ করেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান। ডিএসই’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রস্তাবিত বাজেটকে পুঁজিবাজার বান্ধব উল্লেখ করে চূড়ান্ত বাজেটে ৬টি দাবি তুলে ধরা হয়।

দাবিগুলো হলো:

০১. স্টক এক্সচেঞ্জকে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন পরবর্তী ৫ বছরের জন্য পূর্ণ কর অব্যাহতি সুবিধা প্রদান।

০২. এমএমই মার্কেটের লেনদেনের উপর উৎসে কর অব্যাহতি।

০৩. স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং প্লাটফর্মের মাধ্যমে ট্রেজারি বিল এবং বন্ডের লেনদেনের ওপর কর অব্যাহতির বিষয় সুষ্পষ্টকরণ।

০৪. তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর্পোরেট করের পার্থক্য ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশে উন্নীত করা।

০৫. ট্রেকহোল্ডারদের নিকট হতে উৎসে কর ০.০৫ শতাংশের স্থলে ০.০১৫ শতাংশ করা এবং এই উৎসে আয়কর কর্তনকে করদাতার চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচনা করা।

০৬. বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহার করা।