Decision Maker

বাজার কিভাবে উঠতে পারে: মির্জা আজিজ

দেশের পুঁজিবাজারে চলমান মন্দা ও দুর্দশার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তবে অর্থমন্ত্রী আন্তরিকভাবে বাজার কিভাবে উঠতে পারে সেটা চান বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে স্টেকহোল্ডারদের অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজারে ভালো আইপিও না আসা, নীরিক্ষা প্রতিবেদন নির্ভরযোগ্য না হওয়া, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা এবং ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থা বর্তমান সূচক পতনের গতি বাড়িয়েছে।

সভা থেকে বের হয়ে আসার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মূলত ৪টি বিষয়ে উপর গুরুত্ব আরোপ করেছি। তিনি বলেন, প্রথমত বাজারের জন্য ভালো আইপিও খুব জরুরি। দেশি ও বিদেশি সব ধরনের ভালো কোম্পানিকে বাজারে আনার চেষ্টা করতে হবে। আইপিওর মান নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত: বিভিন্ন রেগুলেটরি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে কোন কোন সময় বাজারে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যেমন বর্তমানে বিটিআরসির সঙ্গে গ্রামীণফোনের একটা ঝামেলা চলছে, এগুলো সমাধান করা দরকার। আর তৃতীয়ত, আইপিও এর ক্ষেত্রে যে কোম্পানি যে অ্যাকাউন্টস দেখিয়ে অনুমোদন নেয়, সেগুলো অনেকক্ষেত্রেই নির্ভরযোগ্য নয়। এগুলোতে কোম্পানির প্রকৃত চিত্র উঠে আসে না। হিসাবকারসাজির মাধ্যমে কোম্পানির ভালো চিত্র দেখানো হয়, যার ফলে ইস্যু আসার সময় দাম অনেক বেশি থাকলেও অল্পকিছুদিন পরে দাম পড়ে যায়। এছাড়াও চতুর্থত: বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে যে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে তার থেকে উত্তরণ না হলে পুঁজিবাজারে প্রত্যাশিত গতি আসবে না।

অপর এক প্রশ্নে মির্জা আজিজ বলেন, সমস্যা যখন জানবেন উত্তরণের বিষয়ও জানবেন। তবে প্রথমত দরকার রেগুলেটরি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় দরকার। ব্যাংকিং সেক্টরের বর্তমার পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ না হলে এটা একটা বড় সমস্যা। সুতরাং এটাকে ঠিক করতে হবে।

অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, অর্থমন্ত্রী আন্তরিকভাবে চান বাজার কিভাবে উঠতে পারে।

সকল বীমা কোম্পানিকে ৩ মাসের মধ্যে পুঁজিবাজারে আসতে হবে- অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন মাসের মধ্যে একেবারে লিস্টেড না হলেও তারাতো আবেদন করবে। আবেদন করলে তারপরে অন্যান্য বিষয়। নিয়মতান্ত্রিকভাবে পুঁজিবাজারে আসতে কত সময় লাগে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা নির্ভর করে তাদের যে রিপোর্ট আছে সেগুলো কতটা বিশ্বাসযোগ্য তার ওপর। এগুলো যদি ঠিক থাকে তাহলে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে আসা সম্ভব।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আয়োজিত সভায় অর্থ সচিব আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাশেম, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সোনালি, অগ্রণী, জনতা ও রূপালি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version