Decision Maker

বিক্রি কমেছে আরএকে সিরামিকসের

চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের পণ্য বিক্রি ১২ কোটি ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা কমেছে। একই সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ৪ কোটি ৪২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পর্ষদ সভায় চলতি হিসাব বছরের অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন হয়েছে, যা পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির মোট ৩১৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ কোটি ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা কম। আগের বছর এ সময়ে মোট ৩২৯ কোটি ৮৮ লাখ ১৪ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছিল।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে ৩৪ কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৮০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৩৮ কোটি ৬৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা এবং ইপিএস ছিল ৯০ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানিটি মোট ১৫৬ কোটি ৭২ লাখ ৪০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ কোটি ২৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা কম। আগের বছর এ সময়ে কোম্পানিটির মোট ১৫৯ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছিল।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ১৫ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয়েছে ৩৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ১৪ কোটি ৫২ লাখ ৭১ হাজার টাকা এবং ইপিএস ছিল ৩৪ পয়সা। অর্থাৎ বিক্রি কমলেও নিট মুনাফা বেড়েছে।

এ বিষয়ে কোম্পানিটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যবসাবহির্ভূত এবং আর্থিক আয় বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বিপণন খরচ কমায় বিক্রি কমা সত্ত্বেও নিট মুনাফা বেড়েছে।

উল্লেখ্য, কোম্পানিটি মূলত বিভিন্ন ধরনের সিরামিকস পণ্য উৎপাদন ও বিপণন করে।

গত ১৩ মে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংস্কারমূলক কাজের জন্য তিন নম্বর প্লান্টের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বাইরে কোম্পানিটির বাকি দুটি টাইলস প্লান্টে উৎপাদন চালু রয়েছে।

একই কারণে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে প্লান্ট-১-এর উৎপাদন বন্ধ রেখেছিল আরএকে সিরামিকস। পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে, এ বছরের ২৫ জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় কাজের মেয়াদ আরো প্রায় ২০ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটির ম্যানেজমেন্ট। ১৫ ফেব্রুয়ারির পর সেখানে উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও সে সময়ের মধ্যে এটি শুরু করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ সংস্কারকাজ শেষে গত রোববার থেকে প্লান্টটিতে উৎপাদন শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে আরএকে সিরামিকস। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটির সম্মিলিতভাবে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ২৯ পয়সা। সম্মিলিতভাবে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৯৭ পয়সা। আগের হিসাব বছর কোম্পানির পুনর্মূল্যায়িত ইপিএস ছিল ২ টাকা ৬২ পয়সা। সে বছর এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৮ টাকা ২৫ পয়সা।

২০১৭ হিসাব বছরের জন্যও ২০ শতাংশ (১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক) লভ্যাংশ দিয়েছিল আরএকে সিরামিকস। এছাড়া ২০১৬ হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা ২০ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক এবং ২০১৫ হিসাব বছরে ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন।

ডিএসইতে বৃহস্পতিবার আরএকে সিরামিকস শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৩১ টাকা ২০ পয়সা। সমাপনী দর নির্ধারণ হয়েছে ৩১ টাকা ৩০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৩০ টাকা ৮০ পয়সা ও ৪৬ টাকা ৭০ পয়সা।

২০১০ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ) লিমিটেড মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক রাস-আল খাইমার গ্রুপের একটি যৌথ উদ্যোগ। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৬০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৪২৭ কোটি ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভ রয়েছে ১২৩ কোটি ৯৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

কোম্পানির মোট শেয়ারের সংখ্যা ৪২ কোটি ৭৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭০১টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৭২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪

দশমিক ৯৯ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বাকি ১২ দশমিক ৮৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ১৫ দশমিক শূন্য ৫, অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১৬ দশমিক ৩।

ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ৬ পরিচালককে কেন আপসারণ নয়: হাইকোর্ট

ফার্স্ট ফাইনান্স লিমিটেডের অর্থপাচার ও কোম্পানিতে অবৈধভাবে পরিচালক নিয়োগের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সাথে ফার্স্ট ফাইন্যান্সের পরিচালক পদে ৬ জনকে তদন্তের পর পরিচালক পদ থেকে কেন অপসারণ করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

এর আগে এ বিষয়ে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন মো. মনিরুজ্জামান। এতে তারেক রহমানের সাবেক এপিএস মিয়া নুরুদ্দিন অপুর বেনামে মানিলন্ডারিং এ অভিযুক্ত টাকায় কেনা ফাস্ট ফাইন্যান্স লিমিটেডের চার প্রতিষ্ঠানের মনোনীত পরিচালকদের ফাস্ট ফাইন্যান্স লিমিটেড থেকে অব্যাহতির আদেশ চাওয়া হয়। তার প্রেক্ষিতেই হাইকোর্ট এ রুল দেন।

এ সময় ফার্স্ট ফাইন্যান্সে সংঘটিত অনিয়ম বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিতে পারায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকারও সমালোচনা করা হয়।

যে চার কোম্পানির পরিচালকদের বিষয়ে অভিযোগ সেগুলো হলো-অ্যালফাবেট অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড, অপারচর ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, রাকাস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও কাসরাজ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অ্যাডভোকেট এমকে রহমান ও ব্যারিস্টার এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান।

রুল জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট এমকে রহমান একুশে টেলিভিশনকে জানান, মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কোম্পানির পরিচালক থেকে অপসারণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে করা আবেদন নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন উচ্চ আদালত। ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ আদেশের কারণে সংশ্লিষ্ট পাঁচ পরিচালকের ফার্স্ট ফাইন্যান্স লিমিটেডের বোর্ড মিটিংয়ে অংশ নেওয়া উচিত হবে না বলেও আদালত জানিয়েছে বলে জানান তিনি।

Exit mobile version