পুঁজিবাজার স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি আইন কানুন বিধি বিধানে প্রয়োজনীয় এবং সংগত সব ধরনের সংস্কার সাধন ইতিমধ্যে অনেকটা করেছে। স্টেক হোল্ডারগন যখন যেভাবে বলেছেন, বিএসইসি তা করতে কার্পন্য করেনি। সরকারও যথেষ্ট সাপোর্ট দিয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন কিন্তু তারপরও দিনের পর দিন পতন হচ্ছে বাজারে। ২০১০ সালে বিনিয়োগকারীদের যেভাবে রাজপথে দেখা গেছে ২০১৯ সালেও সেভাবেই তাদেরকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে। তাহলে এতো সংস্কার এতো বিধি বিধান আইন কানুন কঠোরতা সতর্কতা কি কোনোই কাজে দিল না! আমরা মনে করি এসব কিছুই পুঁজিবাজারকে দীর্ঘ মেয়াদে সুরক্ষা করার এবং বিনিয়োগকারীদের চির জীবনের জন্য নিরাপত্তা দেয়ার বিশাল কর্মযজ্ঞ নিয়ন্ত্রন সংস্থা এরই মধ্যে করে ফেলেছে। কিন্তু তারপরও কেন বাজার পড়ছে সেটি একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। আমাদের কাছে তার সহজ উত্তর হলো সংস্কার করতে গিয়ে কিংবা সাধারন ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে বিএসইসি যে আইন করেছে সেখানে যাদের এবং যেসব গোষ্ঠির আতে ঘাঁ লেগেছে তারাই সম্মিলিতভাবে এখন উঠে পরে লেগেছে বাজার ফালানোর জন্য। তারা তাদের শক্তি দেখাচ্ছে। সম্ভবত তাদের বিশ্বাস হলোঃ আমাদের ট্যাক্স কমাবা না আমরা বাজার ফালাবো। আমাদের হিসাব কঠিন করেছো তাই আমরা বাজার ফালাবো। বছরের পর বছর আমরা স্টক ডিভিডেন্ড দেব এতে বাধ সেধেছো কাজেই আমরা বাজার ফালাবো। আমাদের তালিকাভূক্ত করবা না, দেখি কেমনে তোমরা টিকে থাকো, আমরা বাজার ফালাবো। এই সবগুলো শক্তির বাজার ফেলানোর শক্তি যেদিন শেষ হয়ে যাবে সেদিনই প্রকৃত অর্থে আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে বইবে সুবাতাস। বিনিয়োগকারীরা পাবেন স্বস্তি। স্বাভাবিক গতিতে চলবে এদেশের লেনদেন এবং আমরা মনে করছি সম্ভবত সে দিনটি আর বেশি দূরে নয়।

এদিকে আজ বুধবারের (৩১ জুলাই) বাজার বিশ্লেষনে দেখা যাচ্ছে উত্থানে শেষ হয়েছে লেনদেন। এদিন উভয় শেয়ারবাজারের সব সূচক বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন। তবে এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই ও সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১৩৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়া সূচক ৪ ও ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১৮১ ও ১৮২৮ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে ৪৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪২৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকার। এ হিসাবে আজ ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ১৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা বেড়েছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি কোম্পানির মধ্যে ১২০টি বা ৩৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে দাম কমেছে ১৯৭টি বা ৫৬ শতাংশ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টি বা ১০ শতাংশ কোম্পানির।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে মুন্নু সিরামিকের শেয়ার। এদিন কোম্পানির ১৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন সুজের ১৫ কোটি ৮১ লাখ টাকার এবং ১৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- বাংলাদেশে শিপিং কর্পোরেশন, সিনো বাংলা, স্কয়ার ফার্মা, ওয়াটা কেমিকেল, বিকন ফার্মা, সুহৃদ এবং এসকে ট্রিমস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭২০ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৮১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৯৮টির, কমেছে ১৬৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির দর। আজ সিএসইতে ১৭ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।