Decision Maker

উবার নিয়ে ভয়ংকর তথ্য

তিন দিন আগে রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর তা নিয়ে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ভয়ংকর কিছু তথ্য উঠে এসেছে। যা সাধারণ মানুষের জন্য তো বটেই, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বড় চিন্তার কারণ। পুলিশ বলছে, উবার মটোর চালক সুমন হোসেন ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে উবারের নিবন্ধন নিয়েছিল। এমনকি তার জাতীয় পরিচয়পত্র ভুয়া এবং বিকাশ অ্যাকাউন্টের যে ঠিকানা, সেটাও ভুয়া।

এখানেই শেষ নয়, দুর্ঘটনার পর সেই উবার চালক ফোন বন্ধ করে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে। পরে তাকে ধরতে এবং ওই নিহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য পুলিশ উবার কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চেয়েও পায়নি। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, এতগুলো অপরাধ করেও উবার কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো রকম সহায়তা না করার ধৃষ্টতা দেখিছে।

পুলিশের বরাতে আমরা জেনেছি, সেইদিন উবারের চালক এবং কাভার্ড ভ্যানের চালক দুইজনই বেপরোয়া চালাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে দুর্ঘটনায় পড়ে। তখন বেপরোয়া গতির কাভার্ড ভ্যান ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহমিদা হক লাবণ্যকে পিষে দিয়ে যায়। তবে চালক ব্রেক করলে হয়তো লাবণ্য’র এমন মর্মান্তিক পরিণতি হতো না।

আমাদের প্রশ্ন, একজন ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, বিকাশ নম্বর কিংবা ঠিকানা দিয়ে উবার থেকে নিবন্ধন নেয় কিভাবে? তাহলে কি উবার কর্তৃপক্ষ সেইসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে না? ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে উবারের নিবন্ধন নেওয়া এমন চালকের সংখ্যা কত? দুর্ঘটনার বাইরেও তারা ধর্ষণ, খুন, অপহরণ কিংবা অন্যকোনো বড় বড় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তাদেরকে চিহ্নিত করা কিংবা ধরার উপায় কি?

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে উবার চালকদের এমন বড় বড় অপরাধে যদি জড়িয়ে পড়ার খবর আমরা জানি। সেসব ঘটনার পর সেদেশেও উবার বা অন্য অ্যাপভিত্তিক পরিবহনসেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানকে কঠোর নজরদারির মধ্যে এনেছে। সব রকম যাচাই-বাছাই করেই কেবল নিবন্ধন পাচ্ছে সেখানকার চালকরা। তাহলে একই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তা করছে না কেন? অথচ এদেশে চালুর অল্পদিনের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে উবার।

আমরা জানি, রাজধানী ঢাকাসহ অন্য যেসব এলাকায় উবারের সেবা আছে, তা নিরাপদ মনে করেই অনেক নারী যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করে। কিন্তু আজকের পর সেই উবার তাদের জন্য কতটা নিরাপদ? আর শুধু যে নারীই বিপদে পড়বেন তা নয়, পুরুষ যাত্রীদের জন্য বিপদের মাত্রা কম নয়। অর্থাৎ এই ধরনের চালক সবার জন্যই সমান বিপদের।

আরেকটি বিষয় হলো, এতো বড় একটা ঘটনার পরও উবার কর্তৃপক্ষের এই ধরনের আচরণ। তাদের উচিৎ ছিল নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু তারা তা না করে উল্টো পুলিশকে অসহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশে উবার কি আইনের ঊর্ধ্বে?

এমন অবস্থায় আমরা মনে করি, উবারের সব চালকের জাতীয় পরিচয়পত্র, ঠিকানা, লাইসেন্স, বিকাশ বা অন্যকোনো অ্যাকাউন্টের সব তথ্য কয়েক স্তরে যাচাই-বাছাই করে, তবেই চালকদের হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া উচিৎ। বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। Source: চ্যানেল আই অনলাইন

Exit mobile version