Decision Maker

কারখানার সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ করবে ম্যারিকো বাংলাদেশ

গাজীপুরের মৌচাক ও শিরিরচালায় অবস্থিত দুটি কারখানার সক্ষমতা বাড়াতে ২৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে এফএমসিজি খাতের বহুজাতিক জায়ান্ট ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটির পর্ষদে এ বিনিয়োগ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। আর সম্প্রতি কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডাররাও বিনিয়োগ পরিকল্পনার বিষয়টি অনুমোদন করেছেন।

সম্প্রতি ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে ম্যারিকো বাংলাদেশের ১৯তম এজিএম অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সৌগত গুপ্ত, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশীষ গোপাল, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সঞ্জয় মিশ্রা ও ভিভেক কারভে, স্বতন্ত্র পরিচালক রোকিয়া আফজাল রহমান, মাসুদ খান, আশরাফুল হাদিসহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এজিএমে ম্যারিকো বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৌগত গুপ্ত জানান, গত অর্থবছরে কোম্পানির ২০২ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে। এ সময়ে মোট আয় হয়েছে ৮৭৭ কোটি টাকা। আলোচ্য বছরে ম্যারিকো বাংলাদেশের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৪ টাকা ২০ পয়সায়।

এজিএমে জানানো হয়, সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরে ম্যারিকো বাংলাদেশ কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ও ডিউটি বা শুল্ক বাবদ সরকারের কোষাগারে মোট ২৭৪ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। তাছাড়া এ সময়ে কোম্পানিটি সিএসআর কার্যক্রমের আওতায় সরকার ও ইউএনডিপির সঙ্গে যৌথভাবে স্বপ্ন এবং অদম্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ম্যারিকো অদম্য প্রকল্পের মাধ্যমে অতিদরিদ্র নারীদের ক্ষমতায়ন ও প্রতিবন্ধী তরুণদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে।

এজিএমে ম্যারিকো বাংলাদেশের শেয়ারহোল্ডাররা ৩১ মার্চ সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য ঘোষিত ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করে। এর আগে আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৬০০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। এতে সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরে ম্যারিকো বাংলাদেশের অনুমোদিত মোট লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫০ শতাংশ (প্রতি শেয়ারে ৬৫ টাকা)। এর আগে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য মোট ৬০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল ম্যারিকো। এছাড়া ২০১৭ হিসাব বছরে ৫০০ ও ২০১৬ হিসাব বছরে ৪৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) ম্যারিকো বাংলাদেশের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৬ টাকা ৯৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৭ টাকা ৬২ পয়সা। এ হিসাবে প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ৯ টাকা ৩৩ পয়সা বা ৫২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ৩০ জুন কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৬ টাকা ৮৫ পয়সা।

মুম্বাইভিত্তিক এফএমসিজি কোম্পানি ম্যারিকো ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে। ২০০৯ সালে এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ৪০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে এর পরিশোধিত মূলধন ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৯২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৯০ শতাংশই রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২ দশমিক ৩১ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক ৯৩ ও বাকি দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৩২ দশমিক ৭৪, অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১৫ দশমিক ৮৪।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ম্যারিকো বাংলাদেশ শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ১ হাজার ৭১২ টাকা। এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৯৫ টাকা ও ১ হাজার ৭৪৫ টাকা।

Exit mobile version