গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হিমায়িত খাবার ও আইসক্রিমের পাশাপাশি দেশের বাজারে ডোমিনোজ পিজ্জা বিক্রির সুবাদে ভালো ব্যবসা হয়েছে। বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই ১৮-মার্চ ১৯) গোল্ডেন হারভেস্টের বিক্রয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৫ দশমিক ১৭ শতাংশ।
কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, গেল বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের তুলনায় এ বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানির বিক্রি ভালো হয়েছে। বাজারে প্রচলিত পণ্য হিসেবে বিভিন্ন ধরনের হিমায়িত খাবার ও আইসক্রিমের বিক্রি বেড়েছে। পাশাপাশি নতুন সংযোজন হিসেবে ডোমিনোজ পিত্জা বিক্রি থেকেও ভালো আয় হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে কোম্পানির বিক্রি ও মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বাজারে আইসক্রিমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই শেষ প্রান্তিকে আইসক্রিম বিক্রি থেকেও ভালো আয় আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
গোল্ডেন হারভেস্টের তৃতীয় প্রান্তিকে দেখা যায়, চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বেড়ে ১৫৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময় কোম্পানিটির গ্রস মুনাফা হয়েছে ৭৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ও আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির পরিচালন খাতে ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ও আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৫৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ও আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
আয়কর বাবদ ৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা পরিশোধের পর চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে গোল্ডেন হারভেস্টের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যেখানে গত বছরের একই সময়ে ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা আয়কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছিল ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৬ কোটি ৯ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫৫ পয়সা। আর তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৬৬ পয়সায়।
৮ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে গোল্ডেন হারভেস্ট জানায়, কোম্পানিটির পর্ষদ রাইট শেয়ার ইস্যু পরিকল্পনায় সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংশোধিত অনুসারে ১০ টাকা ফেসভ্যালুতে বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ৩আর:৪ অনুপাতে ৮ কোটি ৯৯ লাখ ৩২ হাজার ৩৪২টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৮৯ কোটি ৯৩ লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা উত্তোলন করা হবে।
রাইট শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাবে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেয়ার জন্য ২৬ মে কারখানা প্রাঙ্গণে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহ্বান করা হয়েছে। রেকর্ড ডেট ছিল ৩০ এপ্রিল। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর শেয়ারহোল্ডার বাছাইয়ের জন্য আরেকটি রেকর্ড নির্ধারণ করা হবে। এর আগে গত বছরের ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় ১০ টাকা ফেসভ্যালুতে ১ আর:১ অনুপাতে রাইট শেয়ার ইস্যু করে ১০৯ কোটি ৮৯ হাজার টাকার মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে কোম্পানিটির পর্ষদ। এ সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৪ পয়সা, যা আগের বছরে ছিল ১ টাকা ৮৯ পয়সা। ৩০ জুন এর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৩১ পয়সায়।
বৃহস্পতিবার গোল্ডেন হারভেস্টের শেয়ার ৩৫ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ২৮ টাকা ২০ পয়সা ও সর্বোচ্চ দর ৪৫ টাকা ২০ পয়সা।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজার দরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য আয় অনুপাত ১৮ দশমিক ৬০। অনিরীক্ষিত প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১৯ দশমিক ৪৪।