পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর রিলেটেড পার্টি লেনদেনের তথ্য দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে এ নির্দেশ দিয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে তার সিস্টার কনসার্ন বা অ্যাসোসিয়েট কোম্পানির ঋণ ও কাঁচামাল সরবরাহ এবং স্থায়ী সম্পদের ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে লেনদেন হয়। এ ধরনের লেনদেনের তথ্য কোম্পানিগুলো আর্থিক প্রতিবেদনে রিলেটেড পার্টি লেনদেন হিসেবে প্রকাশ করে। এমন লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে বিএসইসি। এর লক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) তালিকাভুক্ত সব কোম্পানি থেকে রিলেটেড পার্টি লেনদেনের তথ্য নিয়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সিস্টার কনসার্ন বা অ্যাসোসিয়েট কোম্পানি বা কমন উদ্যোক্তা পরিচালক রয়েছে এমন কোম্পানির সঙ্গে ঋণ ও কাঁচামাল এবং স্থায়ী সম্পদ ক্রয়-বিক্রয়সংক্রান্ত লেনদেনের ক্ষেত্রে আগে থেকেই বিএসইসির দুটি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বেশকিছু কোম্পানি এ ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে কমিশনের নির্দেশনা মানছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে কমন পরিচালক রয়েছে এমন কোম্পানিকে ঋণ বা অ্যাডভান্স দেয়ার ক্ষেত্রে কমিশন ২০০৬ সালে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে মূল কোম্পানি অ্যাসোসিয়েট কোম্পানির যে পরিমাণ শেয়ার ধারণ করে কিংবা কোনো একজন কমন উদ্যোক্তা বা পরিচালক সম্মিলিতভাবে উভয় কোম্পানির যে পরিমাণ শেয়ার ধারণ করেন, তার মূল্যের ৫০ শতাংশের বেশি এক কোম্পানি আরেক কোম্পানিকে ঋণ দিতে পারে না বলে উল্লেখ রয়েছে। আর এ ধরনের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোম্পানির সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন লাগবে। কিন্তু বেশকিছু কোম্পানি এ নিয়ম মানছে না। অর্থাৎ অধিকাংশ কোম্পানিতে রিলেটেড পার্টি লেনদেনে সমস্যা রয়েছে। তাই স্টক এক্সচেঞ্জকে তথ্য সংগ্রহের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। আর এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণ হলে কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অডিটরের বিরুদ্ধেও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, রিলেটেড পার্টির সঙ্গে কোম্পানির কাঁচামাল ও স্থায়ী সম্পদ ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ২০০৯ সালে কমিশন সীমা আরোপ করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। নিয়ম অনুযায়ী অ্যাসোসিয়েট, সিস্টার কনসার্ন বা কমন পরিচালক রয়েছে এমন ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত কোম্পানি তার মোট স্থায়ী সম্পদের এক শতাংশের বেশি লেনদেন করতে পারবে না। আর এমন লেনদেনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ৩০ মিনিটের মধ্যে কমিশন ও স্টক এক্সচেঞ্জকে জানাতে হবে। পাশাপাশি দুটি জাতীয় পত্রিকায় এ সিদ্ধান্তের তথ্য প্রকাশ করতে হবে।