Decision Maker

থ্রি হুইলার ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন করবে রানার অটোমোবাইলস

প্রকৌশল খাতের কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুক বিল্ডিং পদ্ধতির মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন পায় রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। উত্তোলিত ১০০ কোটি টাকা গবেষণা ও উন্নয়ন, যন্ত্রপাতি  কেনা, ব্যাংকঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। ব্যাংকঋণ, আইপিও খরচ বাদে অবশিষ্ট তহবিল ব্যয়ের আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সিএনজি ও এলপিজি-চালিত থ্রি হুইলার প্রগ্রেসিভ ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট (তিন চাকার যান উৎপাদন) স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত বর্তমান কারখানায় কোম্পানিটি বিদ্যমান টু হুইলার যানের পাশাপাশি থ্রি হুইলার উৎপাদন করবে। এতে একদিকে উৎপাদন উপকরণের ব্যয় কমবে, অন্যদিকে বিকাশমান এ বাজারের উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করা যাবে। ফলে কোম্পানির বিক্রি, আয় ও মুুনাফা বাড়বে। নতুন পরিকল্পনা অনুসারে, কোম্পানিটি চেসিস ওয়েল্ডিং লাইন স্থাপনে ১২ কোটি ১৮ লাখ টাকা, বডি ওয়েল্ডিং লাইনে সাত কোটি ১০ লাখ টাকা, পেইন্ট বুথে ২৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা, ভেহিকেল অ্যাসেমব্লি অ্যান্ড টেস্টিং ইউনিটে ১৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এ প্লান্টের মাধ্যমে কোম্পানিটি মাসে তিন হাজার এবং বছরে ৩০ হাজার থ্রি হুইলার উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সম্মতিক্রমে এটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। তাছাড়া পরিচালনা পর্ষদের নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য বিনিয়োগকারী ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন লাগবে। নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের বিষয়ে সম্মতি জানতে আগামী ১৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত ট্রাস্ট মিলনায়তনে বিশেষ সাধারণ সভার (ইজিএম) আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৯ নভেম্বর।

কোম্পানিটি জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে এক টাকা ৪৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল এক টাকা ৪৫ পয়সা। এছাড়া ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৬৬ টাকা ৮৮ পয়সা, যা ২০১৯ সালের ৩০ জুনে ছিল ৬৫ টাকা ৪৯ পয়সা। এই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে ১৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ২৮ পয়সা।

২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ ও পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে পাঁচ টাকা সাত পয়সা এবং এনএভি দাঁড়িয়েছে ৬৫ টাকা ৪৯ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য আগামী ১৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ট্রাস্ট মিলনায়তনে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে।

প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানিটি ২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এন’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১০৮ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৫৬১ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ১০ কোটি ৮১ লাখ ৩৩ হাজার ২৬৯ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৫০ দশমিক চার শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৫ দশমিক ৭০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ৩০৩ দশমিক ৩২ এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ১৪ দশমিক ৫০।

Exit mobile version