Decision Maker

নগদ লভ্যাংশে উৎসাহ দিতে বোনাস ও রিজার্ভের কর প্রস্তাব সংশোধন

পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে নগদ লভ্যাংশকে উৎসাহ দিতে বোনাস ও রিজার্ভে কর আরোপের প্রস্তাবে পরিবর্তন এনেছে সরকার। আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে এই পরিবর্তনের সুপারিশ করেন।

গত ১৩ জুন ঘোষিত বাজেটে বোনাস লভ্যাংশের উপর ১৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল। পাশাপাশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির রিটেইন্ড আর্নিংস ও রিজার্ভের সমষ্টি মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হলে বাড়তি অঙ্কের উপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করার কথাও বলা হয়েছিল প্রস্তাবিত বাজেটে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুসারে, কোনো কোম্পানি নগদ লভ্যাংশের সমপরিমাণ বোনাস দিলে বোনাসের উপর কর দিতে হবে না। আর শুধু বোনাস দিলে অথবা নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি বোনাস দিলে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। অন্যদিকে নিট মুনাফার ৭০ শতাংশের বেশি রিটেইন্ড আর্নিংস ও রিজার্ভ হিসেবে স্থানান্তর করা না হলে তার জন্য কোনো কর দিতে হবে না। কিন্তু ৭০ শতাংশের বেশি স্থানান্তর করা হলে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে তার বক্তব্যে বোনাসে কর প্রসঙ্গে বলেন, “এ বিষয়ে ব্যবসায়ী সমাজের কেউ কেউ আপত্তি জানিয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর জন্য ব্যাংকগুলো নগদ লভ্যাংশ দিতে পারে না।”

তিনি বলেন, “ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের এরূপ মন্তব্যের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ আমাদের ভাবতে হবে। কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীও নগদ লভ্যাংশ প্রত্যাশা করে।”

তাই নতুন প্রস্তাবে স্টক ডিভিডেন্ডের (বোনাস) সঙ্গে সমান হারে নগদ লভ্যাংশও দেওয়ার প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী।

“এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমি প্রস্তাব করছি যে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, কমপক্ষে তার সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। যদি কোম্পানির ঘোষিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে স্টক লভ্যাংশে উপর ১০ শতাংশ হারে কর প্রস্তাব করতে হবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “নগদ লভ্যাংশ উৎসাহিত করায় আমরা আরও প্রস্তাব করেছিলাম যে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি রিটেইনড আর্নিংস, রিজার্ভ থাকলে অতিরিক্ত রিটেইনড আর্নিংস, রিজার্ভের উপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।

“এ বিষয়েও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা কেউ কেউ আপত্তি করেছেন,” মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেই প্রেক্ষাপটে এই ধারাটির আংশিক সংশোধনপূর্বক আমি প্রস্তাব করছি যে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি কোনো অর্থবছরে কর পরবর্তী নিট লাভের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ রিটেইনড আর্নিংস, ফান্ড, রিজার্ভে স্থানান্তর করতে পারবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে।

“যদি কোনো কোম্পানি এরূপ করতে ব্যর্থ হন তাহলে প্রতিবছরে রিটেইনড আর্নিংস, ফান্ড, রিজার্ভের মোট অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “উপরোক্ত বিষয়গুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত আয়কর আইনের প্রস্তাবিত ধারাগুলো আমরা বিবেচনা করবো।”

Exit mobile version