Decision Maker

পুঁজিবাজার নিয়ে বৈঠকে বসছেন অর্থমন্ত্রী

দেশের পুঁজিবাজারে চলছে পতনের মাতম। চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণার পর থেকেই চলছে প্রায় টানা দর পতন। পহেলা জুলাই থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৪৮৮ পয়েন্ট বা ৯ শতাংশ। লেনদেনেও চলছে বড় খরা। দৈনিক গড় লেনদেন ৪শ কোটি টাকার ঘর পেরোতে পারছে না।

অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারক নানা সময়ে বাজার সঠিক পথে আছে দাবি করলেও বাস্তবে তারাও বুঝতে পারছেন বাজারের প্রকৃত অবস্থা। টানা দরপতন, বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ আর গণমাধ্যমের নানা সংবাদে বাজারের নাজুক অবস্থা প্রকটভাবে ধরা পড়ছে। এমন অবস্থায় পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে আছে সরকার। বিশেষ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুপারিশ অনুসারে বাজেটে বেশ কিছু “প্রণোদনা” ঘোষণা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের শর্তাবলী অনেকটা নমনীয় করার পরও বাজারে গতি না ফেরায় তা সরকারকে কিছুটা ভাবনায় ফেলে দিয়েছে। এর মধ্যে গত বুধবার বাজারে বড় দরপতন হলে সরকার কিছুটা নড়েচড়ে বসে। এমন অবস্থায় পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থার কারণ অনুসন্ধান ও করণীয় ঠিক করতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জানা গেছে, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর, সোমবার অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কার্যালয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, ডিএসই ব্রোকারর্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) নেতৃবৃন্দ; আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শীর্ষ ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষসহ (আইডিআরএ) কয়েকটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকতে পারেন। অর্থমন্ত্রণালয় এবং বিএসইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দ্বিতীয় বারের মতো বিএসইসিতে আসছেন। এর আগে গত ২২ এপ্রিল তিনি বিএসইসিতে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। ওই বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন ও তিন কমিশনার অংশ নেন। এতে পুঁজিবাজারের কোনো স্টেকহোল্ডার উপস্থিত ছিলেন না। বিএসইসির কোনো কর্মকর্তাকেও বৈঠকে রাখা হয়নি।

পুঁজিবাজার ইস্যুতে অর্থমন্ত্রীর আগের বৈঠকটিও হয়েছিল বড় পতনের প্রেক্ষিতে। বৈঠকের আগের তিন মাসে ডিএসইএক্স কমেছিল ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ। এই সূচকটি ২৩ জানুয়ারি ৫ হাজার ৯২৫ দশমিক ২৪ পয়েন্টে ছিল। তিন মাসের ব্যবধানে ২১ এপ্রিল তা ৫ হাজার ৩২৩ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে নেমে আসে।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল সূচক পতনের জন্য কেউ কেউ দায়ী বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে সূচকের হঠাৎ উত্থান-পতনের পিছনে কেউ কেউ জড়িত রয়েছেন। আমরা ১৯৯৬, ২০১০ সালে এই ধরনের ঘটনা দেখেছি। দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

Exit mobile version