চলতি ২০১৯ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের বিক্রি ২২ শতাংশ বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মোট বিক্রি হয়েছে ৭৯৬ কোটি ৯২ লাখ ২১ হাজার ৪০৮ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬৫০ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ২৭৭ টাকা। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ১৪৬ কোটি ১ লাখ ৬০ হাজার ১৩১ টাকা বা ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
আলোচ্য সময়ে সম্মিলিতভাবে সিঙ্গার বিডির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৫১ কোটি ২০ লাখ ৪৫ হাজার ২২২ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৪০ কোটি ৩ লাখ ৬ হাজার ৭৬৪ টাকা। এককভাবে নিট মুনাফা হয়েছে ৫১ কোটি ৫৬ লাখ ১ হাজার ২৩৬ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৩৭ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮৪ টাকা।
প্রথমার্ধে সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ১৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ৯৭ পয়সা। এককভাবে ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ১৭ পয়সা, ২০১৮ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে যা ছিল ৩ টাকা ৭১ পয়সা। এ হিসাবে চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে সিঙ্গার বিডির সম্মিলিত ও একক ইপিএস বেড়েছে যথাক্রমে ২৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও ৩৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এদিকে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ৫২১ কোটি ৮২ লাখ ৯৭ হাজার ৮০৫ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪১৬ কোটি ৭৫ লাখ ৪৬ হাজার ১৯০ টাকা। এ হিসাবে দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির বিক্রি বেড়েছে ২৫ দশমিক ২১ শতাংশ।
সর্বশেষ প্রান্তিকে সম্মিলিতভাবে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ৩৮ কোটি ৯৩ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ২৭ কোটি ৭৭ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭৯ টাকা। আলোচ্য সময়ে এককভাবে নিট মুনাফা হয়েছে ৩৮ কোটি ৬৫ লাখ ১৬ হাজার ৭২৭ টাকা, ২০১৮ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে যা ছিল ২৬ কোটি ৭১ লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা।
এপ্রিল-জুন মেয়াদে সিঙ্গার বিডির সম্মিলিত ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৯১ পয়সা। একক ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৮৮ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে সম্মিলিত ও একক ইপিএস ছিল যথাক্রমে ২ টাকা ৭৯ পয়সা ও ২ টাকা ৬৮ পয়সা। এ হিসাবে দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে সম্মিলিতভাবে ৪০ দশমিক ১৪ শতাংশ আর এককভাবে ৪৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
৩০ জুন সম্মিলিতভাবে সিঙ্গার বিডির মোট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭৬ কোটি ৮৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৭১ টাকা, আর এককভাবে ১ হাজার ১৪৪ কোটি ২২ লাখ ৫৪ হাজার ২০২ টাকা। বর্তমানে কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৯৭ লাখ ২ হাজার ৮৩৮। এ হিসাবে ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে সম্মিলিতভাবে ২৫ টাকা ৬৫ পয়সা আর এককভাবে ২৮ টাকা ৪৫ পয়সা।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৩০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে সিঙ্গার বিডি। গেল হিসাব বছর কোম্পানিটির সম্মিলিত ইপিএস হয়েছে ১১ টাকা ৯৬ পয়সা, আগের হিসাব বছর যা ছিল ৯ টাকা ৭৯ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর সম্মিলিত এনএভিপিএস ছিল ২৩ টাকা ১৮ পয়সা।
গত বছর প্রকৌশল খাতের বহুজাতিক কোম্পানিটি বিক্রি ও মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০১৮ হিসাব বছরে ২৪ শতাংশ বিক্রয় প্রবৃদ্ধির বিপরীতে তাদের কর-পরবর্তী মুনাফা বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে কম্পিউটার বিক্রিতে—৭০ শতাংশ। এছাড়া প্যানেল টেলিভিশনের বিক্রি ২৮ শতাংশ, ওয়াশিং মেশিন ২৪ শতাংশ, কিচেন অ্যান্ড স্মল অ্যাপ্লায়েন্সেস ২০ শতাংশ ও রেফ্রিজারেটরের বিক্রি ১৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরে বিক্রি ছিল ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। গ্রস মার্জিন দাঁড়ায় ২৮ দশমিক ৫ শতাংশে। ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানির পরিচালন মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সিঙ্গার বিডির সর্বশেষ দর ছিল ২০৩ টাকা ৮০ পয়সা। সমাপনী দর ছিল ২০৩ টাকা ২০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১৬৫ টাকা ১০ পয়সা ও ২৭৯ টাকা ৯০ পয়সা।
১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিঙ্গার বিডির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১৩১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৫৭ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালক নেদারল্যান্ডসভিত্তিক রিটেইল হোল্ডিংস বিহোল্ড বিভির হাতে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৬ দশমিক ৯২ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ২০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত বার্ষিক ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ২২ দশমিক শূন্য ৯, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত প্রান্তিক ইপিএসের ভিত্তিতে যা ১৯ দশমিক ৭৭।