Decision Maker

বেড়েছে সূচক ও লেনদেন: উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে কঠিন সময় পার করছে পুঁজিবাজার

দীর্ঘদিন যাবৎ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে এক কঠিন সময় পার করছে দেশের পুঁজিবাজার। ভীতি না কাটার পাশাপাশি এখনও আস্থা রাখতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে লেনদেনে পুরোপুরি সক্রিয় হচ্ছেন না তারা। মূলত নানামূখী পদক্ষেপ নেয়ার পরও অদৃশ্য কারণে সৃষ্ট দর পতনে বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছেন, যে কারণে সম্প্রতিক শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেড়ে গেছে। ফলে বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। যদিও আজ সূচক ও লেনদেনে ইতিবাচক ধারা বিরাজ করছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে আমরা যা প্রত্যাশা করি, তার সঙ্গে প্রাপ্তি কখনোই মিলবে না। কারণ সব সময়ই আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে। তবে কিছু প্রত্যাশা প্রাপ্তিতে পরিণত হয়। যদিও এখন বাজারে কিছুটা খারাপ সময় চলছে। তবে আশা করি খুব শিগগিরই তা ভালো হয়ে যাবে। কারণ খারাপ সময়ও বেশি দিন থাকে না।

কেউ কেউ বলছেন, পুঁজিবাজার কোথায় ছিল? আর আজকে কোথায় নেমে এসেছে। এখানে নেতৃত্ব ও নীতির সমন্বয়ের বিষয়টিতে অনেক ঘাটতি রয়েছে। আসলে পুঁজিবাজার হচ্ছে এখন মামা-ভাগ্নের বাজার। কেন বলছি, মামা কিছু একটা করে আর ভাগ্নে অভিমান করে। আবার যখন মামা ভাগ্নের অভিমান কিছু দিয়ে ভেঙে দেয়, তখন ভাগ্নে মামার জয়গান গায়। এখন বাজার এরকম অবস্থানে চলে আসছে। অর্থাৎ এখানে মামা হচ্ছে বিএসইসি আর ভাগ্নে হচ্ছে ডিএসই ও সিএসই। কারণ এ দুটি সংস্থার বাজারে যে ভূমিকা পালন করার কথা সেটি না করে মামা-ভাগ্নের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করছে। হয়তো তাদের জন্য এটি লাভজনক। কাজেই পুঁজিবাজারের স্বার্থে এটিকে যারা ভালোভাবে পরিচালনা করেছেন, তাদের পরামর্শক হিসেবে আনা যেতে পারে। অর্থাৎ, যারা পুঁজিবাজার সম্পর্কে ভালো বোঝেন, তাদের বোর্ডে নিয়ে আসুন বা তাদের নিয়ে একটি আলাদা পরামর্শক বোর্ড গঠন করা যেতে পারে।

এদিকে, আজকের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানে শেষ হয় লেনদেন। এদিন লেনদেনের শুরুতে উত্থান থাকলেও কিছুক্ষণ পর সৃষ্ট বিক্রয় চাপে নামতে থাকে সূচক। তবে দুই ঘন্টা পর ক্রয় চাপে ঘুঁড়ে দাঁড়ায় সূচক। ফলশ্রুতিতে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪৭০৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১০৮১ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৬৩৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৫০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৯২টির, কমেছে ১০১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৭টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৩০৭ কোটি ৭৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

অথচ এর আগের কার্যদিবস দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ৩৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৪৬৭৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১০৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১৬২৬ পয়েন্টে। আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ২৬৯ কোটি ৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৩৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৬৮৯ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৬০টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৮টির, কমেছে ৮৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭১ হাজার টাকা।

Exit mobile version