প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা দুর্নীতি করছে তাদেরই ধরা হচ্ছে। এখানে কোনো ক্রাইটেরিয়ায় ধরা হচ্ছে না। এখানে আইওয়াশের কিছু নেই। যে অপরাধী সে অপরাধীই। আমি আপন-পর দেখছি না।
তিনি বলেন, শুধু ক্যাসিনো নয়, ব্যাংক জালিয়াতি ও শেয়ারবাজারের হোতাদেরও ধরা হবে।
গতকাল বিকালে গণভবনে ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ছিলেন।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা আপাদমস্তক দুর্নীতিবাজ, যাদের বিরুদ্ধে খুন-দুর্নীতি-অগ্নিসন্ত্রাস-অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে, যে দলের শীর্ষ দুজনই দুর্নীতির দায়ে দি ত, তারা দুর্নীতিবিরোধী অভিযান নিয়ে কথা বলে কোন মুখে, কোন সাহসে! অপরাধী অপরাধীই। সবাইকে ধরা হবে। কখন কাকে ধরা হবে, তা সময়ই বলে দেবে। আর অপেক্ষা করুন, চলমান অভিযান আইওয়াশ কিনা তা দেখতে পারবেন।
তিনি বলেন, জীবনের ভয় বলে কোনো কথা আমার ডিকশনারিতে নেই। ভয় থাকলে এমন অভিযানে নামতাম না।
“ভয় আমার ডিকশনারিতে নাই”
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের এক নেতা জেনে হোক, না জেনে হোক একটা কথা বলে ফেলেছেন। তিনি তার সংসদীয় এলাকায় একটা ক্লাবের (ক্যাসিনো) সভাপতিও। নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি নিজের নির্বাচিত হওয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তারা ছাত্রজীবন থেকেই এমন। আমরা তো একসঙ্গে রাজনীতি করেছি, জানি। ১৪ দল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে আমার কোনো কথা নেই।”
তিনি বলেন, “আমি এতে ভয় পাই না। ভয় আমার ডিকশনারিতে নেই। আমি সব সময় এক বৈরি পরিবেশে রাজনীতি করে এসেছি। উজানে নাও ঠেলে ঠেলে এখানে (সরকারে) এসেছি। কাজেই কথায় কী আসে যায়? কথা বলার বলুক।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশ বিক্রি করে দেবে, দেশের ক্ষতি হবে, এগুলো বলতো। এখন কী প্রমাণ হলো- আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়। বাংলাদেশ হারানো সম্মান ফিরে পেয়েছে। সব দেশের সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়নের বিস্ময় হিসেবে প্রকাশ করছে।”
“সাকিব তার ভুল বুঝতে পেরেছে”
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের পাশে থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “ক্রিকেটে অনেক সময় জুযাড়িরা যোগাযোগ করে। সাকিবের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে। নিয়মটা হলো আইসিসি-কে জানানো। সে সেটা করেনি (জানায়নি)। অবশ্য, সাকিব তার ভুলটা বুঝতে পেরেছে। এ বিষয়ে আমাদের বিসিবি বলেছে, তারা সাকিবের পাশে থাকবে। আপনারাও জানেন, আইসিসি কোনো ব্যবস্থা নিলে আমাদের কিছু করার থাকে না। তারপরও আমাদের বিসিবি তার সঙ্গে থাকবে। এর চেয়ে খুব বেশি কিছু করার নেই।”
“ক্রিকেটদের আন্দোলনের সঙ্গে ক্যাসিনোর সম্পৃক্ততা আনছেন কেনো?” প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ক্যাসিনোর সঙ্গে সাংবাদিকরাও তো জড়িত। তাদের নাম আসলে কী করবেন?”
এসময় তিনি সাংবাদিকদের অপকর্মের কথা উল্লেখ করে বলেন, “একজন সম্পাদক একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে ফোন করে টাকা চেয়েছে, না দিলে তার বিরুদ্ধে লিখে তার ক্যারিয়ার শেষ করে দেবে। এমডিকে ফোন করে টাকার এমাউন্টও বলে দিয়েছে। তার রেকর্ডও আছে।”
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবর্গ, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ ও দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।