পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দেয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।তবে এ সংক্রান্ত নোটিফিকেশনটি ইতোমধ্যে জারি করা হয়েছে।
সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সংরক্ষিত মূলধন, পুনর্মূল্যায়নজনিত উদ্বৃত্ত, আনরিয়েলাইজড গেইন থেকে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসাবে প্রদান করা যাবে না। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো শুধু পুঞ্জিভূত মুনাফা ও শেয়ার প্রিমিয়ামের বিপরীতে বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে। তবে লভ্যাংশ দেয়ার পর অবণ্টিত মুনাফা বা রিটেইন্ড আর্নিংস ঋণাত্মক অংকে নামলেও কোনো কোম্পানি বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।
নোটিফিকেশনে বিএসইসি বলছে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী ও বাজারের স্বার্থে মূলধন ইস্যু, পাবলিক অফারের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ বিক্রিতে আরো শর্তারোপ প্রয়োজন রয়েছে।এরই অংশ হিসেবে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯-এর ২ সিসি ক্ষমতা বলে বোনাস শেয়ার ইস্যুর ওপর নিম্নলিখিত শর্তগুলো আরোপ করা হলো।
১। সম্প্রসারণ, সুষমকরণ, আধুনিকীকরণ, পুনর্গঠন ও বিস্তারের (বিএমআরই) মতো যৌক্তিক কারণগুলো অনুপস্থিত থাকলে কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি এখন থেকে বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।
২। বোনাস শেয়ার ঘোষণা করতে হলে মূল্যসংবেদনশীল তথ্য আকারে বোনাস শেয়ার ইস্যুর কারণ এবং এর বিপরীতে ধরে রাখা অর্থ কিভাবে ব্যবহার করা হবে তা প্রকাশ করতে হবে। যেমনটি আইপিওর অর্থ ব্যবহারের বিষয়ে করতে হয়।
৩। শুধু পুঞ্জীভূত মুনাফা বা শেয়ার প্রিমিয়ামের অর্থের বিপরীতে বোনাস শেয়ার ইস্যু করা যাবে। তবে সংরক্ষিত মূলধন, পুনর্মূল্যায়নজনিত উদ্বৃত্ত, কোনো আনরিয়েলাইজড গেইন তথা এখনো বুঝে নেয়া হয়নি এমন মুনাফা থেকে বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা যাবে না।
৪। কোম্পানি গঠনের আগে ব্যবসার মুনাফা কিংবা পরিশোধিত মূলধন হ্রাসজনিত কারণে বর্ধিত তহবিলও বোনাস শেয়ার ইস্যুর কাজে ব্যবহার করা যাবে না। লভ্যাংশ দেয়ার পর অবণ্টিত মুনাফা বা রিটেইন্ড আর্নিংস ঋণাত্মক অংকে নেমে গেলেও কোনো কোম্পানি বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।
বিএসইসি সূত্র বলছে, নগদ লভ্যাংশ বিতরণ না করে স্টক লভ্যাংশ বা বোনাস শেয়ার দেয়ার অর্থ হলো মুনাফার টাকা আবার মূলধনে রূপান্তর করা হচ্ছে। কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণ বা গুণগত মানোন্নয়নের জন্য পুঁজির প্রয়োজন হলে এটি করা যেতে পারে। আর এমন কোনো যৌক্তিক প্রেক্ষাপট না থাকলে বছর বছর অকারণে শেয়ার সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ আর থাকছে না। কেউ প্রয়োজন ছাড়া বোনাস শেয়ারের মাধ্যমে মূলধন বাড়ালেও তা ব্যবহারের ঘোষণাটি বাস্তবায়ন করে দেখাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে কোম্পানির কোন ধরনের সম্পদ থেকে বোনাস শেয়ার ইস্যু করা যাবে আর কোনগুলো থেকে যাবে না—এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা আসায় নন-পারফর্মিং কোম্পানিগুলোর বোনাস শেয়ার দেয়ার সক্ষমতাও কিছুটা টান পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।