অনিয়মের করায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ট্রেকহোল্ডার শাহ মোহাম্মদ সগির অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ডিপোজিটরি পাটিসিপেন্টে (ডিপি) সনদ স্থগিত করেছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। রোববার বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সভা শেষে বিএইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, মাসে দুইবার সেটেলমেন্ট ব্যর্থতার কারণে ডিএসইর নির্দেশে স্টক ব্রোকার শাহ মোহাম্মদ সগির অ্যান্ড কোম্পানির লেনদেন স্থগিত রাখা হয়েছে। এছাড়া স্টক ব্রোকারটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ঘাটতি রয়েছে।

শাহ মোহাম্মদ সগির অ্যান্ড কোম্পানির বিরুদ্ধে বিনিয়েঅগকারীদের ৬টি অভিযোগ কাস্টমার কমপ্লেইন্ট অ্যাড্রেস মডিউল’ (সিসিএএম)- এর মাধ্যমে বিএসইসিতে জমা পড়েছে বলেও জানান সাইফুর রহমান।

স্টক ব্রোকারটির অনিয়ম ক্ষতি দেখতে বিএসইসির কমিশন সভায় একটি পরিদর্শন দল গঠন করা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ পরিদর্শন দল ডিএসইর মাধ্যমে শাহ মোহাম্মদ সগির অ্যান্ড কোম্পানি পরিদর্শন করবে। ডিএসইর এ পরিদর্শন দলকে দুই সপ্তাহের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন দালিক করতে হবে।

স্টক ব্রোকারটির ডিপি সনদ স্থগিত রাখার বিষয়ে সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, কমিশন সভায় শাহ মোহাম্মদ সগির অ্যান্ড কোম্পানির ডিপি সনদ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ডিপি কার্যক্রম স্থগিত থাকাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের কোন বিও হিসাবধারী চাইলে লিংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তার শেয়ার স্থঅনান্তর করতে পারবেন। এ জন্য ডিএসই অথবা সিডিবিএল-এ যোগাযোগ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৯ অক্টোবর পুঁজিবাজার বিষয়ক দেশের সর্বপ্রথম অনলাইন নিউজপোর্টাল শেয়ারনিউজ২৪.কমেশাহ মোহাম্মদ সগির সিকিউরিটিজ হাউজের অনিয়ম নিয়ে
অনিয়মে স্থগিত শাহ মোহাম্মদ সগিরের লেনদেন: উৎকন্ঠায় বিনিয়োগকারীরা শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল,গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৫ তারিখ থেকে কোন প্রকার বাই-সেল করতে পারছি না। এমনকি গত দুই মাস যাবত আমরা টাকা উঠানোর রিক্যুইজিশন দিলেও হাউজ কর্তৃপক্ষ তা দিচ্ছে না। এছাড়াও রিং সাইন টেক্সটাইলের আইপিওতে আবেদনের প্রেক্ষিতে টাকা কেটে নিলেও আমাদের আবেদন করা হয় নি। সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা একেকদিন একেকরকম কথা বলছেন। কখনো বলছেন মালিকানা পরিবর্তন হবে, আবার কখনো বলছেন আজকালের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। এছাড়া কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে ফোন দিলেও কোম্পানির এমডি, চেয়ারম্যান ফোন রিসিভ করছেন না। বলেওবিনিয়োগকারীরাঅভিযোগ করেন।
এর প্রেক্ষিতে শেয়ারনিউজ২৪.কমের প্রতিনিধিরা শাহ মোহাম্মদ সগির অ্যান্ড কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। সেসময় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও এমডি/সিইওকে পাওয়া যায়নি। আর যারাই উপস্থিত ছিলেন তারাও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন কথা বলতে রাজি হন নি।
এ বিষয়ে জানতে তখন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান তাহমিনা জামানকে মুঠোফোনে (মোবাইল নং-০১৭৯৮-৬১…৯৮) একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে মুঠোফোনে (মোবাইল নং-০১৭১৪-৩৮…৩৯) যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একটু সমস্যা হয়ে গেছে, যা আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে লিঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে শেয়ার ট্রান্সফারে হাউজ কর্মকর্তাদের অসহযোগীতার কারণ এবং সমস্যার সমাধানে কালক্ষেপনের সময়কালে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ লোকসানের দায় কে নেবে- এমন প্রশ্ন রাখলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।