আদালতের আদেশ অনুযায়ী তালিকাভুক্ত কোম্পানি আলহাজ্জ্ব টেক্সটাইলের পাওনা ১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৫৭ টাকা পরিশোধ করেছে অগ্রণী ব্যাংক। সম্প্রতি এই অর্থ হাতে পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আদালতের আদেশে কোম্পানি ১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৫৭ টাকা পেয়েছে। গত ২০ মে আলহাজ্ব টেক্সটাইলের ব্যাংক একাউন্টে এ টাকা জমা হয়েছে, যা অগ্রণী ব্যাংক প্রদান করেছে।
এর আগে কোর্টের আদেশ অনুযায়ী অগ্রণী ব্যাংক আলহাজ্ব টেক্সটাইলের প্রাপ্য ২৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।
গত ৫ মার্চ অগ্রণী ব্যাংক ও আলহাজ্জ্ব টেক্সটাইলের মামলার আপিলের আদেশ দেন সুপ্রিমকোর্ট। বিচারপতি ইমান আলীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী অগ্রণী ব্যাংককে ৪ এপ্রিলের মধ্যে এই অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ৩১ জানুয়ারি মহামান্য হাইকোর্ট থেকে এফডিআর মামলার রায়ের লিখিত আদেশ দেওয়া হয়। রায়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলহাজ্জ টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষকে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। অর্থ পরিশোধ করে ৭ দিনের মধ্যে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করার জন্য অগ্রণী ব্যাংকের এমডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে আলহাজ্জের পাওনা অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীকালে এর বিরুদ্ধে আপিল করে অগ্রণী ব্যাংক।
কোর্টের লিখিত আদেশ বলা হয়, অগ্রণী ব্যাংকের ইশ্বরদী শাখায় ১৯৮৯ সালের ২২ জানুয়ারি সময়ে সুদসহ আলহ্বাজ টেক্সটাইলের এফডিআর তহবিলের পরিমাণ ছিল ৪৩ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার ৫৫৬ টাকা। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি অগ্রণী ব্যাংক কোম্পানিকে পরিশোধ করে ৮ কোটি ১১ লাখ ২৫ হাজার ২ টাকা। এতে তহবিলের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৫ কোটি ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকা। এরপর ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে তহবিলে সুদ যুক্ত হয় ২০ কোটি ৮৩ লাখ ৯ হাজার ২৫ টাকা। পরে সুদসহ মোট তহবিলের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৮ টাকা।
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি আদালত আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পক্ষে রায় দিয়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৮ টাকা পরিশোধের জন্য অগ্রণী ব্যাংকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি এই টাকা পরিশোধ করে ৭ দিনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার জন্য অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ওই দিন মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মানমুন রহমান এবং বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের যৌথ বেঞ্জ এই আদেশ প্রদান করেন।
এই মামলায় অগ্রণী ব্যাংকের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট একেএম বদরুদ্দোজা ও মনিরুজ্জামান। আর আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট প্রবির নিয়োগী এবং হাসনাত কাইউম।
অগ্রণী ব্যাংক এবং আলহাজ্ব টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষের যৌথ সম্মতিতে পিনাকী অ্যান্ড কোম্পানিকে অডিটর নিয়োগ করা হয়। যে প্রতিষ্ঠানটি অগ্রণী ব্যাংকের সুদ হার অনুযায়ী আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পাওনা টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করে। আর সব নিয়ম পরিপালন করে অডিটর কোম্পানির গত ২৪/১০/২০১৮ তারিখ পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংকের নিকট আলহাজ্ব টেক্সটাইলের মোট পাওনা ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৮ টাকা নির্ধারণ করে।
মহামান্য আদালত অডিটর প্রতিষ্ঠানের প্রদানকৃত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে রায় প্রদান করেন।