পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১২টি কোম্পানির শেয়ারমূল্য কারসাজিতে ফেঁসে যেতে পারে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক ও তালিকাভুক্ত কোম্পানি রয়েছে। কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার মূল্য কারসাজিতে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল বলে মনে করছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে এসেছে। বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।সূত্র জানিয়েছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৬৯৬তম কমিশন সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হয়েছে। ওই বৈঠকে রিপোর্টটি বিএসইসির এরফোর্সমেন্ট বিভাগে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য। একই বৈঠকে ৭ জন ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া আলোচিত বিনিয়োগকারী, ২ জন বিনিয়োগকারীর স্ত্রী ও ২ জন বিনিয়োগকারীর মালিকানানাধীন কোম্পানির শেয়ার জব্দ করা হয়।
আলোচিত বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত ১২টি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করেছেন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে খোদ কোম্পানি এই কারসাজির সঙ্গে যুক্ত। এরা নানা মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের জন্ম দিয়েছে অন্য কারসাজিকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে। এই তথ্যকে কাজে লাগিয়ে নিজেরা বেশি দামে শেয়ার বিক্রি করেছে, পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠিকে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের মূল্য বাড়িয়ে বিপুল মুনাফা করার সুযোগ দিয়েছে। আলহাজ টেক্সটাইল, মুন্নু সিরামিকসহ কয়েকটি কোম্পানি রয়েছে এই তালিকায়।
আন্যদিকে কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারহাউজের বিরুদ্ধে সীমার অতিরিক্ত মার্জিন ঋণ দেওয়া, শর্ট সেলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এরা নানাভাবে সিকিউরিটিজ আইন ও বিধিমালা লংঘন করেছেন।
বিধি অনুসারে, বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগ প্রথমে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ জানাবে, অভিযোগের ব্যাপারে তাদের কোনো ব্যাখ্যা থাকলে জানাবে। এরপর তাদেরকে শুনানীতে ডাকা হবে। তাদের দেওয়া বক্তব্য পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ শাস্তির সুপারিশ করবে (যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হয়), যা কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যকর হবে।
যেসব কোম্পানির শেয়ারে কারসাজি হয়েছে-
আলোচিত কারসাজিকারীরা বিভিন্ন খাতের কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করেছেন। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- ইউনাইটেড পাওয়ার, ভিএসএফ থ্রেড, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, এস এস স্টিল, ইনটেক লিমিটেড, সায়হাম টেক্সটাইল, সায়হাম কটন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু সিরামিকস, মুন্নু জুট স্টাফলার, আইসিবি ও ডাচ বাংলা ব্যাংক।
যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে-
শামসুল হুদা, বিশ্বজিত দাস ও তার স্ত্রী, কাজী মোঃ শাহাদাত হোসেন ও তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বি অ্যান্ড বিএস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মোঃ সাইফুল্লাহ, হোসাম মোঃ সিরাজ, এ এস এস আহসান হাবিব চৌধুরী, লুৎফুল গনি টিটু ও তার স্ত্রী এবং তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সাত রং এগ্রো ফিশারিজ লিমিটেড।