নিজেদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি বাড়তি মুনাফার আশায় সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। যে হাউজের সেবার মান যত ভালো হবে সেই হাউজেই বিনিয়োগকারীরা যাবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বর্তমানে হাউজগুলোর মধ্যে গ্রাহক টানার অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সর্বশেষ নির্দেশ অনুযায়ী মার্জিন ঋণের সীমা ১:০.৫। অর্থাৎ গ্রাহকের তহবিলের অর্ধেক পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে দেওয়া যাবে। বিএসইসির এই নির্দেশনাকে উপেক্ষা অনেক হাউজ দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত মার্জিন ঋণ প্রদান করছে। অনেক সময় এর পরিমাণ চারগুণে গিয়ে ঠেকছে। এক হাউজের ক্লায়েন্টকে অন্য হাউজে নেওয়ার এই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সামগ্রিক পুঁজিবাজারে বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
মাত্রাতিরিক্ত মার্জিন ঋণ দেওয়ায় শুধু যে বিনিয়োগকারী বিপাকে পড়ছেন তা নয়, খোদ হাউজও একটি সময় গিয়ে বিপথের সম্মুখীন হচ্ছে। শেয়ার দর কমে যাওয়ায় একদিকে লোকসান অন্যদিকে হাউজগুলোর ঋণ পরিশোধের চাপ এই উভয় সংকটে দিশেহারা হয়ে অনেক বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন। হাউজগুলোও তাদের পাওনা ফোর্সসেল দিয়ে উঠিয়ে নিচ্ছেন। নতুন করে পোর্টফোলিওতে টাকা জমা করলে পূর্বের ঋণের সঙ্গে সমন্বয় হয়ে যাবে সেই আতঙ্কে অনেকে টাকাও জমা দিচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই হাউজগুলো শেয়ার বিক্রি করে নিজেদের পাওনা বুঝে নিচ্ছে। এতে বাজারে সেল প্রেসারের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সামগ্রিক পুঁজিবাজারও নেতিবাচক ধারা থেকে উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
অনেক হাউজ ক্লায়েন্টকে খুশি করে নিজেদের আওতায় রাখতে লেনদেনের কমিশনেও ভালো ছাড় দিচ্ছে। সেটা বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো হলেও মার্জিন ঋণ প্রদানে যে অনিয়ম করছে তা মোটেও পুঁজিবাজারের জন্য ভালো নয়। কয়েকটি হাউজকে অবশ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা নজরে এনে আর্থিক জরিমানা পর্যন্ত করেছে। কিন্তু অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়নি। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধে বিএসইসি এবং স্টক এক্সচেঞ্জের মনিটরিং টিমকে শক্তিশালী করা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।