বাজেটে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের অনেক দাবিও পূরণ হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই যেন গতি ফিরে পাচ্ছে না পুঁজিবাজার। মন্দা অবস্থায়ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অব্যাহত শেয়ার বিক্রি বাজারকে কলুষিত করছে। শেয়ার বিক্রি করার মতো দৃশ্যমান কোনো কারণ না থাকলেও প্রতিনিয়ত বড় ব্রোকার ও ডিলার শেয়ার বিক্রি করেছে। পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বেশি। তবে প্রাতিষ্ঠানিকরা নিষ্ক্রীয় হলে বাজারে পতন ঘটে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। সেই আতঙ্ক থেকেই পুঁজিবাজারে পতন হচ্ছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগোচ্ছে ও বাজেটের আকার যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে বিবেচনা করলে বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ নয়। যদি পরিমাণ হিসেবে বিবেচনা করি, সে হিসেবে বিদেশি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে কিন্তু অর্থনীতির আকারের সঙ্গে তুলনা করে সেভাবে বাড়ছে না। তাহলে সমস্যা কোথায়। বিশেষজ্ঞদের অনুসন্ধানে বেশকিছু সমস্যা বেরিয়ে এসেছে। যেমন, গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং জমির সংকট। সময়মতো গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে সমস্যা, আবার বিদেশি বিনিয়োগকারী জমি পান না। বিভিন্ন বন্দরে সেবা এবং হাইওয়ে রোডের সমস্যা প্রভৃতি দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি সরকার এ বিষয়ে নজরদারিতে নিয়েছে। যেমন নতুন যে অর্থনৈতিক জোন করেছে সেখানে যে বিদ্যুৎ সংকট ছিল তা সমাধার দিকে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরও বিনিয়োগ বাড়ছে না। এখানে মনে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোনো না কোনোভাবে আস্থাহীনতা কাজ করছে। কাজেই বিনিয়োগ বাড়াতে অনাস্থা দূর করতে হবে বলেও মনে করছেন তারা।

এদিকে, আজকের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন লেনদেনের শুরুতে উত্থান থাকলেও কিছুক্ষণ পর সৃষ্ট বিক্রয় চাপে টানা নামতে থাকে সূচক। এরই ধারাবাহিকতায় টানা চার কার্যদিবস ধরে পতনে বিরাজ করছে বাজার। সোমবার লেনদেন শেষে সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে টাকার অংকে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫০৩৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১১৭২ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭৭৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৫৪টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০০টির, কমেছে ২০৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৫টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৪৪২ কোটি ৯০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

এর আগের কার্যদিবস দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ২৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫০৭০ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১১৭৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১৭৯১ পয়েন্টে। আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ৩৩২ কোটি ৪০ লাখ ৮১ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১১০ কোটি ৪৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ৫৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৪৭টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫১টির, কমেছে ৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ২৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।