সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক ও লেনদেনে ইতিবাচক প্রবণতা বিরাজ করছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজার চাঙা করতে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ওপর স্ট্যাম্প ডিউটি কমানো, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্যহ্রাস জনিত ক্ষতির বিপরীতে স্টক ডিলারদেরকেও প্রভিশন সংরক্ষণ সংক্রান্ত সুবিধা, আইপিও শেয়ার লেনদেনের শুরুর দিন থেকে সার্কিট ব্রেকার কার্যকর এবং একই জাতীয় পরিচায়পত্র, মোবাইল নাম্বার এবং ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে খোলা বিভিন্ন বিও হিসাব বন্ধের সময়সীমা বাড়ানোর ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আজ বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি কিছুটা আকৃষ্ট হয়েছেন। তবে বাজার যে তলানিতে রয়েছে সেখান থেকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে সূচকে টানা উত্থান জরুরি বলেও মনে করছেন তারা।

কেউ কেউ বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকেই বাজারের অবস্থা খারাপ। একটি পুঁজিবাজার যদি বছরের ১১ মাসই খারাপ অবস্থায় থাকে সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীর আস্থা ও আগ্রহ এমনিতেই কমে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। দীর্ঘদিন ধরে বাজার নিম্নগতিতে রয়েছে কেন, এটাই এখন সবার প্রশ্ন। আসলে আমাদের পুঁজিবাজারে তেমন ভালোমানের রিসার্স সেন্টার নেই। ক্যাপিটাল মার্কেটে মানি মার্কেটের কী প্রভাব রয়েছে, ক্যাপিটাল মার্কেটের দুর্বল দিক কোনটা ও বিনিয়োগকারীরা কেন বাজারমুখী হচ্ছেন না। এসব বিষয় ভালো করে পর্যালোচনা করা দরকার। বিশ্বের সব পুঁজিবাজারেই খারাপ আবস্থা বিরাজ করে। সেটি দীর্ঘস্থায়ী থাকে না এবং দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু আমাদের বাজার বিপরীতমুখী চলে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ অবস্থায় বাজারকে গতিশীল করতে হলে কিছু পক্ষের অংশগ্রহণ খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে ব্যাংক, বিমা, আর্থিক এবং আইসিবি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ। এসব প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাজার ভালো করা খুবই কষ্টকর।

এদিকে, আজকের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এদিন লেনদেনের শুরু থেকেই সৃষ্ট ক্রয় চাপে টানা বাড়তে থাকে সূচক। বুধবার লেনদেন শেষে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৫০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪৭৫৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১০৮৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৬৫৪ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৫১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২২১টির, কমেছে ৮১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৩৮৫ কোটি ২৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।

এর আগের কার্যদিবস দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৪৭০৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১০৮১ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৬৩৭ পয়েন্টে। আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ৩০৭ কোটি ৭৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৭৭ কোটি ৪৯ লাখ ২২ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৬০টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৬টির, কমেছে ৫৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৫৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা।