বাজার ভালো করতে হলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে
সুশাসনের মধ্যে আনতে হবে। কারণ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সুশাসনের কম বেশি অভাব রয়েছে। তবে
সবচেয়ে বেশি সুশাসনের অভাবে রয়েছে পুঁজিবাজার, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। তাই
বিএসইসি, ডিএসই সিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, ডিলার প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলোর
যার যার স্থান থেকে যে দায়িত্ব রয়েছে সেটি সঠিকভাবে পালন করা উচিত। যাতে কোনো রকম অনিয়ম
বা দুর্নীতি না হয়। এটা সঠিকভাবে পালন করলে বাজার ভালো অবস্থানে যাবে। গতকাল এনটিভির
মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত
ছিলেন দৈনিক সমকালের বিজনেস এডিটর মো. জাকির হোসেন এবং গ্রামীণ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
লিমিটেডের এমডি ও সিইও মোহাম্মদ আহছান উল্যা।
মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি মার্কেট
নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু বাজারের কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে
না। এতে বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরে আসছে না। যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাজারে। সূচক,
টার্নওভার, বাজার মূলধন এবং প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের দর কমে যাচ্ছে। আসলে এ সিদ্ধান্তগুলো
আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। শুধু তারল্য সংকটে বাজারে এ অবস্থা তা কিন্তু নয়। বাজারের
এ অবস্থার জন্য আরও অনেক কারণ রয়েছে। এ জন্য বিনিয়োগকারীরা বাজার নিয়ে ভরসা পাচ্ছে
না। যার ফলে বাজার দীর্ঘস্থায়ীভাবে গতিশীল হচ্ছে না। ২০১৮ সালে অনেক কোম্পানি লভ্যাংশ
ঘোষণা করেছে। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের ৩০টি কোম্পানি লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি
ব্যাংকের লভ্যাংশ আগের বছরের চেয়ে কমেছে, ছয়টি ব্যাংকের লভ্যাংশ গ্রোথ বেড়েছে, দুটি
ব্যাংক কোনো লভ্যাংশ দেয়নি এবং বাকি ব্যাংকগুলো আগের মতোই লভ্যাংশ দিয়েছে। আমরা বাজারে
আস্থার কথা বলি, বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতার কথা বলি, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে এবং
ব্যবসা বাণিজ্য ভালো। এসব পরিসংখ্যানের মাঝে দেখা যাচ্ছে অনেক কোম্পানি প্রত্যাশিত
লভ্যাংশ দিচ্ছে না। আবার অনেক কোম্পানি বছরের পর বছর বোনাস শেয়ার দিয়ে যাচ্ছে। এবার
ব্যাংকগুলোর বেশিরভাগ বোনাস শেয়ার দিয়েছে। শুধু যে ব্যাংক বোনাস শেয়ার দিচ্ছে তা নয়,
আরও বিভিন্ন কোম্পানি বোনাস শেয়ার দিয়ে যাচ্ছে। আসলে বোনাসের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের
তেমন লাভ হয় না। বাজার ভালো করতে হলে বাজারসংশ্লিষ্ট সবাইকে সুশাসনের মধ্যে আনতে হবে।
কারণ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সুশাসন নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি
সুশাসনের অভাবে রয়েছে পুঁজিবাজার, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। তাই বিএসইসি, ডিএসই
সিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, ডিলার প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলোর যার যার স্থান
থেকে যে দায়িত্ব রয়েছে সেটি সঠিকভাবে পালন করা উচিত। যাতে কোনো রকম অনিয়ম বা দুর্নীতি
না ঘটে। এটা সঠিকভাবে পালন করলে বাজার ভালো অবস্থানে যাবে বলে মনে করি।
মোহাম্মদ আহছান উল্যা বলেন, বাজার অনেক দিন ধরে নিন্মগতিতে
রয়েছে। ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাজার তেমন গতিশীল দেখা যায়নি। শুধু ২০১৭ সালে জানুয়ারিতে
বাজার কিছুটা ভালো ছিল। বাকি সময়টা বাজার খারাপ ছিল। বাজারের সঙ্গে তিনটি প্রতিষ্ঠান
ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নিয়ন্ত্রক সংস্থা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং এনবিআর। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের
প্রধানকে এক সঙ্গে বসে সম্মিলিতভাবে সিদ্বান্ত নিতে হবে। বিভিন্ন ধরনের পণ্য আনতে হবে
বিশেষ করে ডেরিভেটিফ পণ্য, বন্ড এবং ভালো মানের মিউচুয়াল ফান্ড। আবার বোনাস শেয়ার থেকে
নগদ দেওয়ায় উৎসাহী করতে হবে কোম্পানিগুলোকে।