সম্প্রতি স্মল ক্যাপিটাল বাজার বোর্ড
গঠন করা হয়েছে। স্মল ক্যাপিটালে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে পারবেন না। সেখানে
শুধু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনাবেচা করবেন। আসলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের
স্বার্থ রক্ষায় এটা করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ
রক্ষা হচ্ছে না। যেমন, কোনো একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লে সেটির জন্য জবাবদিহিতা
করতে হয়; কিন্তু যখন কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যায়, তখন সেটির জন্য কোনো জবাবদিহিতা
করতে হয় না কেন? গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের
সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শাহজাহান মিনা এবং
কনসালট্যান্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ বিপ্লব।
এম শাহজাহান মিনা বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে
বাজারের বিনিয়োগসীমা অর্থাৎ এক্সপোজার লিমিট বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি
করেছে। এটি বাজার-সংশ্লিষ্টরা বহুদিন দাবি করে আসছিলেন। এ প্রজ্ঞাপন জারি বাজারের জন্য
ইতিবাচক হবে। প্রজ্ঞাপন জারির আগে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আসন্ন বাজেটে বাজারের জন্য ভালো
একটা প্রণোদনা থাকবে। এর ফলে গত রোববার বাজার ইতিবাচক দেখা গেছে। অর্থাৎ সূচক ১০৫ পয়েন্ট
বেড়েছে। তবে সবার প্রত্যাশা ছিল সূচক বাড়ার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। কিন্তু সেটা না
হয়ে বরং সূচক কমে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গত মাসের ২৯ তারিখে এক সভায় বিএসইসির
প্রধান বলেছিলেন, আর কোনো আইপিও অনুমোদন দেবেন না এবং প্লেসমেন্ট শেয়ার তিন বছর লগ-ইন
থাকবে। কিন্তু সম্প্রতি এক সভায় আগের অবস্থান থেকে সরে এসে প্লেসমেন্ট শেয়ার তিন বছর
লগ-ইন থাকার বিষয়টি জনমত যাচাইয়ের জন্য দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বাজার নিয়ে বিভিন্ন
ধরনের মন্তব্য আসছে। আসলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা একেক সময় একেক কথা বলে। এতে সত্যিকার অর্থে
বিনিয়োগকারীরা বাজার সম্পর্কে অনাস্থায় ভুগছেন এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি বিনিয়োগকারীদের
এক ধরনের অনীহা সৃষ্টি হচ্ছে। ২০১০ সালে বাজারে যখন ধস হয়, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিভিন্ন নিয়ম-নীতি পরিবর্তনের চিন্তা করেছিল। আসলে নিজেদেরই বাজার
নিয়ে আত্মবিশ্বাস ছিল না। অর্থাৎ বাজারে কী হচ্ছে বা কী হওয়া উচিত। বর্তমানে নিয়ন্ত্রক
সংস্থাও এ ধরনের পরিস্থিতিতে রয়েছে মনে হচ্ছে। এটি হতাশাজনক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হচ্ছে
বাজারের অভিভাবক এবং এ সংস্থার ওপর নির্ভর করে বাজারের ভালো, মন্দ ও শিল্পায়ন। নিয়ন্ত্রক
সংস্থা যদি তাদের কথাবার্তায় ধারাবাহিকতা বজায় না রাখে, সেক্ষেত্রে বাজার নেতিবাচক
কাজ করবে।
হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর অনেক
নিয়ন-নীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। সম্প্রতি এক্সচেঞ্জ ট্রেডেট ফান্ড, ইসলামিক বন্ড, শর্ট
সেলের আইন হয়েছে এবং এর সঙ্গে স্মল ক্যাপিটাল বাজার বোর্ড গঠন করা হয়েছে। স্মল ক্যাপিটালে
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে পারবেন না। এখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের একটি ক্ষোভ
রয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কথা হচ্ছে, বাজার সবার জন্য উš§ুক্ত হওয়া উচিত। কিন্তু
সেখানে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনাবেচা করবেন। আসলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের
স্বার্থ রক্ষায় এটা করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তাদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না।
যেমন, কোনো একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লে সেটির জন্য জবাবদিহিতা করতে হয়; কিন্তু
যখন কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম কমে, তখন সেটির কোনো জবাবদিহিতা করতে হয় না।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপন জারির
কারণে গত রোববার বাজার সূচক ১০৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। ঠিক যখনই বাজার একটু ইতিবাচক
দেখা গেছে, তখনই বাজারে নতুন আসা রানারের ট্রেডিং শুরু হচ্ছে। যদি কোম্পানিটির এ সপ্তাহে
ট্রেডিং না হয়ে আগামী সপ্তাহে হতো, সেক্ষেত্রে বাজারের জন্য ভালো হতো।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাজারের যে অবস্থা,
অর্থাৎ এ অবস্থায় রানারের এমন কোনো আয় নেই যে, ৭৫ টাকায় শেয়ারটি কেনার দরকার রয়েছে।